ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১০ আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:১১ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২১
সাইফুর রহমান শামীম, কুড়িগ্রাম ।। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন কুড়িগ্রাম সহ বৃহত্তর রংপুরের ফকির ও সন্ন্যাসীরা। যা ইতিহাসে ফকির সন্ন্যাসী বিদ্রোহ নামে খ্যাত। এই সংগ্রামে ফকিরদের নেতৃত্বে ছিলেন ফকির মজনু শাহ বুরহানা আর সন্ন্যাসীদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ভবানী পাঠক। ভবানী পাঠক ছিলেন রংপুরের পীরগাছা এলাকার মন্থনার জমিদার জয়দুর্গা দেবী চৌধুরানীর নায়েব। তার বাড়ি ছিল কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার পাঠকপাড়ায়। তিনি বিভিন্ন এলাকায় শিবমন্দির নামে মঠ তৈরি করেন।
এই মঠগুলোতে অবস্থান নিয়ে সন্ন্যাসীরা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে এলাকার সাধারণ মানুষকে সংগঠিত করতেন। সংস্কারের অভাবে কালের সাক্ষী সেই মঠগুলো কোনো রকমে টিকে আছে। পলাশী যুদ্ধের পর রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার সুযোগে ফকির ও সন্ন্যাসীরা বিদ্রোহী হয়ে স্বাধীনতার জন্য প্রত্যক্ষ সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন।
১৭৭০ সালে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। এই দুর্ভিক্ষের শিকার ভূমিহীন ও নিরন্ন কৃষকদের সমর্থন পান বিদ্রোহীরা। এ সময় বিদ্রোহী সন্ন্যাসীদের মাধ্যমে ভূমিহীন ও নিরন্ন কৃষকদের স্বাধীনতা সংগ্রামের পক্ষে সংগঠিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এজন্য ১৭৭০ থেকে ১৭৭২ সালের মধ্যে বিভিন্ন এলাকায় শিবমন্দির নামে মঠ নির্মাণ করেছিলেন ভবানী পাঠক। তাই এগুলো ভবানী পাঠকের মঠ নামে পরিচিত। ভবানী পাঠকের নির্মিত মঠগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে নাগেশ্বরী উপজেলার কাচারি পয়রাডাঙ্গা এলাকায় কুড়িগ্রাম-নাগেশ্বরী সড়কের দু’পাশে নির্মিত দুটি শিবমন্দির, কামাক্ষা মাতা ঠাকুরানী মন্দির, বাঁশেরতল শিবমন্দির, উলিপুর উপজেলার ধামশ্রেণী এলাকার দোল মন্দির ও শিবমন্দির এবং ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা এলাকার শিবমন্দির। অপূর্ব স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত মঠগুলোর আদল প্রায় একই রকম।
সংগ্রামের সাক্ষী মঠগুলোর ধ্বংসাবশেষ পড়ে রয়েছে এখন, যা ক্রমেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST