শুভ জন্মদিন গানের পাখি সাবিনা ইয়াসমিনকে নিয়ে কিছু কথা।

প্রকাশিত: ১:৫৪ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৪, ২০২০

শুভ জন্মদিন  গানের পাখি   সাবিনা ইয়াসমিনকে নিয়ে কিছু কথা।

।।গোলাম মোস্তফা খান।।
সাবিনা ইয়াসমিনের জন্ম ৪ সেপ্টেম্বর ১৯৫৪ সালে সাতক্ষীরায়। তাদের পৈত্রিক বাড়ি সেখানেই। তিনি একজন খ্যাতনামা সঙ্গীত শিল্পী।

দেশাত্মবোধক গান থেকে প্রায় পাঁচ দশক ধরে বাংলা গানের বিভিন্ন ধারার নানান (উচ্চাঙ্গ ধ্রুপদ, লোকসঙ্গীত থেকে আধুনিক বাংলা গানসহ চলচ্চিত্র) মিশ্র আঙ্গিকের সুরে অবাধ যাতায়াতে সঙ্গীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিনের খ্যাতি বিশ্বব্যাপী।

সব ক’টা জানালা খুলে দাও না, মাঝি নাও ছাড়িয়া দে, সুন্দর সুবর্ণ-এ ধরনের অসংখ্য কালজয়ী গানের শিল্পী তিনি।

ছায়াছবিতে ১২ হাজারের মতো গান করছেন তিনি। দশবার পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার।

তার ৫ বোনের মাঝে ৪ বোনই গান করেছেন। তারা হলেন ফরিদা ইয়াসমিন, ফওজিয়া খান, নীলুফার ইয়াসমিন এবং সাবিনা ইয়াসমিন।

তার বড় বোন ফরিদা ইয়াসমিন যখন গান শিখতেন দুর্গাপ্রসাদ রায়ের কাছে তখন ছোট্ট সাবিনাও উপস্থিত থাকতেন।

পরবর্তীতে ওস্তাদ পি সি গোমেজের কাছে একটানা ১৩ বছর তালিম নিয়েছেন।

মাত্র ৭ বছর বয়সে স্টেজ প্রোগ্রামে অংশ নেন। ছোটদের সংগঠন খেলাঘরের সদস্য হিসেবে রেডিও ও টেলিভিশনে গান করেন নিয়মিত।

১৯৬৭ সালে ‘আগুন নিয়ে খেলা’ এবং ‘মধুর জোছনা দীপালি’ গানটির মাধ্যমে তিনি প্লেব্যাক গায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।তবে ‘নতুন সুর’ ছবিতে প্রথম গান করেন তিনি শিশু শিল্পী হিসেবে।

সাবিনা ইয়াসমিন;যিনি পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে গানের ভূবনে বিচরন করছেন-বাংলাদেশের ইতিহাসে একমাত্র রুনা লায়লা ছাড়া তার সমকক্ষ হয়ে আর কেউ বোধ হয় এত লম্বা সময় ধরে আধিপত্য বজায় রেখে চলতে পারেন নাই।

গত কয়েক দশকে তিনি সর্বমোট কত হাজার গান গেয়েছেন তার সঠিক হিসেব হয়ত সাবিনা নিজেও দিতে পারবেননা তবে মরমী শিল্পী সেই আব্দুল আলীম থেকে শুরু করে একালের কোন উঠতি গায়কের সাথেও অবিরাম গেয়ে চলেছেন একের পর এক গান।

সুযোগ পেয়েছেন উপমহাদেশের বরেণ্য সুরকার আর,ডি,বর্মণের সুরে গান গাওয়ার, বিখ্যাত কিশোর কুমার ও মান্না দের সাথেও ডুয়েট গান গাওয়ার।

১৯৮৫ সালে গানের জন্য ভারত থেকে ‘ডক্টরেট” ও লাভ করেছেন।

সাবিনা ইয়াসমিন সংগীতে অবদানের জন্য পুরষ্কৃত হয়েছেন অনেক বার। যেমন – ১৯৮৪ সালে একুশে পদক, ১৯৯৬ সালে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার মোট ১০টি, বাচসাস পুরস্কার মোট ৬টি, বিএফজেএ পুরস্কার মোট ১৯৯১ সালে। উত্তম কুমার পুরস্কার ১৯৯১ সালে, এইচ এম ভি ডাবল প্লাটিনাম ডিস্ক,বিশ্ব উন্নয়ন সংসদ থেকে সংগীতে ‘ডক্টরেট’ ডিগ্রি লাভ করেছেন ১৯৮৪ সালে।

১৯৭৪ ও ১৯৭৫ সালে জহির রায়হান চলচ্চিত্র পুরস্কার, ১৯৭৫ সালে পূর্বাণী চলচ্চিত্র পুরস্কার, ১৯৯০ সালে শেরে বাংলা স্মৃতি পদক, ১৯৯২ সালে অ্যাস্ট্রোলজি পুরস্কার,১৯৯২ সালে জিয়া স্মৃতি পদক এবং নিউইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে পান ‘বেস্ট সিঙ্গার’ পুরস্কার।

গান গাওয়ার জন্য সাবিনা ইয়াসমিন বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছেন যেমন ইংল্যান্ড,সুইডেন,নরওয়ে,হংকং,আমেরিকা,বাহরাইন ইত্যাদি।এছাড়া ভারত, পাকিস্তানে তিনি অনেকবার ভ্রমণ করেছেন। এছাড়া তিনি বিভিন্ন ভাষায় গান গেয়েছেন।

সাবিনা ইয়াসমিন গাজী মাজহারুল আনোয়ারের ‘উল্কা’ নামের সিনেমাতে অভিনয় করেছেন।

তিনি ২০১০ সালে চ্যানেল আই সেরা কন্ঠ নির্বাচনে একজন বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সাবিনা ইয়াসমিনের ক্যারিয়ারে খান আতাউর রহমানের অবদান অনেক।শুভ কামনা আজকের দিনে।


alokito tv

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest