চট্টগ্রাম বন্দরে সেডে বিপদজনক পণ্যের নিলাম শুরু!!!

প্রকাশিত: ১০:১৬ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৪, ২০২০

চট্টগ্রাম বন্দরে সেডে বিপদজনক পণ্যের নিলাম শুরু!!!

রায়হান হোসাইন,চট্টগ্রাম মহানগর প্রধানঃ-
নানা জটিলতায় চট্টগ্রাম বন্দরের শেডে দীর্ঘদিন পড়ে থাকা বিপজ্জনক পণ্য সম্প্রতি নিলামে বিক্রি ও ধ্বংস করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা বিপজ্জনক রাসায়নিক পণ্যের নিরাপদ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার পাশাপাশি অগ্নিনির্বাপণের জন্য আধুনিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছেন।
তবে পর্যায়ক্রমে কাস্টমসের পক্ষ থেকে এসব পণ্য নিলামের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কাস্টমস কর্মকর্তারা। আর বন্দরে থাকা সব রাসায়নিকই বিপজ্জনক নয় বলে জানিয়েছেন বন্দর কর্মকর্তারা। বন্দরের নিরাপত্তা বাড়াতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বন্দর কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশে আমদানি রপ্তানির সিংহভাগ হয়ে থাকে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। আর এই বন্দরের অভ্যন্তরে ১ লাখ ২৬ হাজার প্যাকেজে ৫ হাজার ৭৪১ টন নিলামযোগ্য পণ্য পড়ে আছে। এর মধ্যে এক হাজার ৩৯৫ প্যাকেজ বিপজ্জনক পণ্য ছিল। যা পর্যায়ক্রমে নিলাম করার বা ধ্বংস করার পক্রিয়া চলছে।

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আনা রাসায়নিক পদার্থ ও বিপজ্জনক পণ্য রাখা হয় পি-শেডসহ বিভিন্ন শেডে। আমদানিকৃত পণ্য ইয়ার্ড থেকে ৩০ দিনের মধ্যে না নিলে শুল্ক বিভাগে হস্তান্তর করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এরপর পণ্য খালাস না নিলে আমদানিকারককে নোটিশ দেয় কাস্টমস। ১৫ দিনের মধ্যে পণ্য খালাস না করলে কাস্টম কর্তৃপক্ষ সেসব নিলামে তুলতে পারে।

আবার কেউ মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য এনে জব্দ হলে সেগুলোও নিলামে তোলার বিধান আছে। কিন্তু সর্বমোট ৪৫ দিনের মধ্যে নিলামে তোলার এই বিধান থাকলে বন্দরের বিভিন্ন শেডে রাসায়নিক পণ্যসহ বিপজ্জনক পণ্য পড়ে আছে কয়েকবছর ধরে। পণ্যগুলো নিলামে তুলতে বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বন্দর কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (অ্যাডমিন অ্যান্ড প্ল্যানিং) মোঃ জাফর আলম বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে থাকা সব রাসায়নিকই বিপজ্জনক নয়। বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাই সবচেয়ে বড় কথা। রাসায়নিক পণ্য সুরক্ষিতভাবে আনা হয়। বন্দরের কিছু কিছু পণ্য আছে অনেকদিন ধরে নেয়া হয়নি। তা চিহ্নিত করে অকশনের জন্য কাস্টমসকে দেয়া হয়েছে। তবে বন্দরে বিস্ফোরক জাতীয় কিছু নেই। ২৫৪ কনটেইনারের পণ্য অকশনের জন্য কাস্টমসকে বলেছি। তারাও প্রক্রিয়া শুরু করেছে। বন্দরে অভ্যন্তরে প্রতিটি শেডে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের জয়েন্ট কমিশনার অব কাস্টমস, মোহাম্মদ মাহবুব হাসান বলেন, বন্দরের তালিকা পাওয়ার পর নিলাম প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। নিলামের জন্য ২০১৪ ও ২০১৫ সালে আনা পণ্যও রয়েছে। বন্দরের চিঠি পাওয়ার পর পি শেডে থাকা বিপজ্জনক পণ্যসহ যেসব পণ্যের তালিকা আছে সেগুলোকে নিলামে তোলা হয়েছে। এসব পণ্য বন্দর থেকে বের করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আর যেগুলো নষ্ট হয়ে গেছে বা চিহ্নিত করা যায়নি সেগুলো পর্যায়ক্রমে ধ্বংস করা হবে।

ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, রাসায়নিক পণ্য হ্যান্ডেলিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট নিয়মনীতি আছে। কিন্তু এই নিয়মকানুন চট্টগ্রাম বন্দরে পর্যাপ্ত নেই বলে মনে করেন ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ চট্টগ্রামের সভাপতি এসএম আবু তৈয়ব।

তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরকে একটি নিরাপদ স্থানে পরিণত করতে হবে। সব পণ্যই বন্দরের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসবে ও বের হবে। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, রাসায়নিক পণ্য হ্যান্ডেলিং করার যোগ্যতা চট্টগ্রাম বন্দরের আছে কিনা। রাসায়নিক পণ্য হ্যান্ডেলিং করার জন্য একটা নির্দিষ্ট নিয়ম কানুন আছে। এই নিয়মকানুনগুলো চট্টগ্রাম বন্দরে পর্যাপ্ত আছে বলে আমি মনে করি না।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest