ঢাকা ১৯ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:০৮ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৭, ২০২০
অনলাইন ডেস্ক:গত সোমবার (১২ অক্টোবর) মুসলিমদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে হজ পালনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে চীনের ধর্মবিষয়ক বিভাগ এক ঘোষণায় বলে, ‘সৌদি আরবমুখী সব ধরনের ধর্মীয় ভ্রমণ সরকার নিয়ন্ত্রিত সংস্থা ইসলামিক অ্যাসোসিয়েশন অব চায়নার মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে। ব্যক্তিগতভাবে কারো হজে যাওয়া-আসার সুযোগ নেই।’
চীনের মুসলিমদের জন্য ব্যক্তিগত উদ্যোগে হজ পালনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে হজ যাত্রীদের জন্য নতুন নীতিমালায় বেশ কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছে দেশটির সরকার। ধর্মীয় বিধান নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
আইনটির মাধ্যমে ব্যক্তিগত উদ্যোগে বা বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার মাধ্যমে হজ ভ্রমণ করার আর কোনো সুযোগ নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম কমিশনের সদস্য উইঘুর আমেরিকান মুসলিম নুরি তুরকি বলেন, ‘২০০৫ সাল থেকে অফিশিয়াল হজ অনুমোদন ও ব্যক্তিগত হজকে বেআইনি ঘোষণার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু নতুন ঘোষণায় অংশগ্রহণকারীর কিছু বৈশিষ্ট্যও বর্ণনা করা হয়, যার মাধ্যমে চীন সরকার হজযাত্রীদের নির্বাচন করবে। দেশপ্রেমিক, আইন মান্যকারী, সুন্দর আচরণ ধারণকারী ও দেশবিরোধী ধর্মীয় চেতনামুক্ত ব্যক্তিদের ভ্রমণের জন্য নির্বাচন করা হবে।’
সরকারি বিধি-নিষেধ, পাসপোর্ট সমস্যা ও কমপক্ষে ৬০ বছর হওয়ার শর্তারোপ করায় হজে উইঘুর মুসলিমদের খুব কমসংখ্যকই অংশ নিতে পারে।
তাইওয়ানের ন্যাশনাল তাসিং হুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিভাগের সেন্ট্রাল এশিয়ান রিলেশনস-এর প্রভাষক শিহ চিয়েন ইউ বলেন, ‘ইসলামী শিক্ষা ও অনুশাসনে অভ্যস্ত হওয়ার আশংকা করে বেইজিং সরকার কর্তৃক ধর্মীয় বিধি-বিধান নিয়ন্ত্রণের আকেরটি চিত্র হলো হজের নতুন আইন। হজের সময় পুরো বিশ্ব থেকে মুসলিমরা একটি স্থানে সমবেত হয়। নানান অভিজ্ঞতার কথা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন তাঁরা। একে অপর থেকে অনুপ্রেরণা পান।’
শিহ চিয়েন আরো বলেন, ‘হজ পালন শেষ করে নিজ দেশে ফিরে স্থানীয় ধর্মীয় ব্যক্তিদের সমালোচনা করেন তাঁরা। যার ফলে এই ইস্যুটি তৈরি হয়। হজের পর ফিরলে স্থানীয়রা তাঁদের অনেক সম্মান করে। তাঁদের হাজি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
ইসলামকে একটি সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে চীন সরকার ‘সিনোফিকেশন অব রিলিজিয়ন’ নীতি গ্রহণ করে। ইসলামের ধর্মীয় চিন্তা-চেতানাকে চীনের ভাবাদর্শপুষ্ট হিসেবে গড়ে তোলায় নিমগ্ন হয় দেশটির সরকার।
শিহ চিয়েন বলেন, ‘মানুষের নিজেদের চলাচল নিয়ে কমিউনিস্ট দলটির কোনো ভাবনা নেই। তবে তাঁদের ফিরে আসার পরের ফলাফল নিয়ে তাঁদের দুশ্চিন্তা।’
এদিকে জিংজিয়ান মুসলিমদের ধর্মীয় কার্যক্রমে বিধি-নিষেধ আরোপ করায় তীব্র সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয় চীন সরকারকে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো জানায়, ১০ লাখের বেশি উইঘুর ও অন্যান্য প্রদেশের মুসলিমদের বিশেষ ক্যাম্পে বন্দি করে রাখা হয়। অনেককে শ্রমে বাধ্য করা হয়।
সূত্র : সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST