ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত কি বাংলাদেশের আইনে শাস্তিযোগ্য?

প্রকাশিত: ১১:০৭ অপরাহ্ণ, জুন ৭, ২০২২

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত কি বাংলাদেশের আইনে শাস্তিযোগ্য?

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত কি বাংলাদেশের আইনে শাস্তিযোগ্য?

বাংলাদেশের বিদ্যমান আইনে ধর্ম অবমাননা কিংবা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত প্রদানকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।

গ্রিক শব্দ ব্লাসফেমেন থেকে ব্লাসফেমি শব্দের উৎপত্তি। যার অর্থ ধর্ম নিন্দা বা ঈশ্বর নিন্দা। এক কথায় কারো ওপর অপবাদ বা কলঙ্ক আরোপ করা বা সম্মানে আঘাত করাই ব্লাসফেমি। তবে ব্লাসফেমি বলতে প্রকৃতপক্ষে ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি অসম্মান বোঝায়। কিন্তু বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে ধর্মীয় অবমাননাকে সংজ্ঞায়িত না করার কারণে অনেকেই হয়রানির শিকার হতে পারে।

আদালতে মামলা কে করতে পারবেন ?
ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত হলে যে কোন সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি আইনের সহায়তা নিতে পারেন। তিনি যেমন থানায় মামলা করতে পারেন, আবার সরাসরি আদালতেও মামলা করতে পারেন। এসব ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার পর প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী বিচার ও শাস্তি হতে পারে। তবে বাংলাদেশে ধর্মীয় অনুভূতি আহত হওয়ার অভিযোগে বিক্ষোভ-সমাবেশ হলেও আইনের আশ্রয় নেয়ার উদাহরণ খুবই কম।

২০১৮ সালে বাংলাদেশে যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন তৈরি করা হয়েছে, সেখানে প্রযুক্তি ব্যবহার করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত বা ধর্ম বিশ্বাসে আঘাত করার শাস্তি বাড়ানো হয়েছে।

এই আইনের ২৮ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, যদি কেউ কোন কিছু প্রকাশ, সম্প্রচার, ওয়েবসাইট বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে প্রচারের মাধ্যমে ইচ্ছাকৃতভাবে বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কারো ধর্মীয় বিশ্বাস বা মূল্যবোধে আঘাত করেন, তাহলে সেটা একটা অপরাধ বলে বিবেচিত হবে।

এ ধরণের অপরাধ করলে অনূর্ধ্ব সাত বছরের কারাদণ্ড এবং অনূর্ধ্ব ১০ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড হতে পারে।

তবে কেউ যদি দ্বিতীয়বার একই ধরণের অপরাধ করেন, তাহলে তার অনূর্ধ্ব ১০ বছরের কারাদণ্ড, ২০ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড হতে পারে।

দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ২৯৫ক ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে বাংলাদেশের যে কোনো নাগরিকের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অসদুদ্দেশ্যে লিখিত বা মৌখিক বক্তব্য দ্বারা কিংবা দৃশ্যমান অঙ্গভঙ্গি দ্বারা সংশ্লিষ্ট ধর্মটিকে বা কারো ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি অবমাননা করে বা অবমাননার চেষ্টা করে, সে ক্ষেত্রে সেই ব্যক্তিকে দুই বছর পর্যন্ত মেয়াদের কারাদণ্ড অথবা অর্থদণ্ড কিংবা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত করা যেতে পারে। ১৮৬০ সালের মূল আইনে এ ধারাটি ছিল না। পরবর্তীতে ১৯২৭ সালে এক সংশোধনীর মাধ্যমে এ ধারাটি যুক্ত করা হয়।

সুতরাং যেকোন ধর্ম নিয়ে কথা বলতে হলে খুবই চিন্তা ভাবনা করে বলতে হবে।


মুজিব বর্ষ

Pin It on Pinterest