কাঠালিয়ায় ৯শিক্ষকের বিরুদ্ধে একই অর্থ বছরে একাধিকবার শ্রান্তি বিনোদন ভাতা উত্তোলনের অভিযোগ

প্রকাশিত: ৯:০৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৪, ২০২০

কাঠালিয়ায় ৯শিক্ষকের বিরুদ্ধে একই অর্থ বছরে একাধিকবার শ্রান্তি বিনোদন ভাতা উত্তোলনের অভিযোগ

কাঠালিয়া(ঝালকাঠি) প্রতিনিধি
ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৯জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিধিবর্হিভূত ভাবে একই অর্থ বছরে একাধিকবার শ্রান্তি বিনোদন ভাতা নামে লাখলাখ উত্তোলন ও নথি গায়েবের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানাগেছে, একজন শিক্ষক তিন বছর পরপর এককালীন ১৫ দিন ছুটি ভোগ করলে একবার শ্রান্তি বিনোদন ভাতা প্রাপ্ত হবেন। কিন্তু ওই ৯জন শিক্ষকই বিগত অর্থ বছরে তাদের প্রাপ্য এ সুবিধা ভোগ করা সত্বেও উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম দূর্নীতি ও মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে অবৈধ ভাবে ওই নয় শিক্ষকদের নামে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে বিভিন্ন তারিখে তিনটি বিলের মাধ্যমে ৪ লাখ ২৩ হাজার ৬৭০ টাকা শান্তি বিনোদন ভাতা পাস করেন। যা ওই ৯ শিক্ষক তাদের স্ব-স্ব একাউন্ট থেকে আগস্ট/১৯ ও সেপ্টেম্বর/১৯ মাসে সোনালী ব্যাংক কাঠালিয়া শাখা থেকে উত্তোলন করেন। বিষয়টি গত জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে সাবেক উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ নাসির উদ্দীন খলিফা (অ:দা:) এর নজরে পড়লে বেড়িয়ে আসে অবৈধ ভাবে শ্রান্তি বিনোদন ভাতা প্রদান, উত্তোলনের ও আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর এ তথ্য। এ শান্তি বিনোদন ভাতা প্রদানের নথি সংশ্লিষ্ট শিক্ষা অফিস থেকে গায়েব হওয়ায় উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিস ও ব্যাংক স্টেটমেন্ট থেকে এ বিষয়ে নিশ্চিত হন এ কর্মকর্তা।

এ প্রেক্ষিতে গত ১৬/০৬/২০২০ তারিখে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ নাসির উদ্দীন খলিফা (অ:দা:) এর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানো একটি চিঠি ৯জন শিক্ষককে দেয়া হয়। এ চিঠিতে বলা হয়, কেন সরকারি অর্থ অবৈধভাবে উত্তোলন করেছেন এর সন্তোষজনক জবাব পত্র প্রাপ্তির দশ(১০) কার্য দিবসের মধ্যে দাখিল অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এ মর্মে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট সুপারিশ করা হয়।

অভিযুক্ত ৯জন শিক্ষক হলেন- ১৮নং উত্তর আউরা স: প্রা: বিদ্যায়ের সহ: শি: মেহেদী হাসান (১৬,৭৪০/-), ৫৯নং বাঁশবাড়ি স: প্রা: বিদ্যালয়ের সহ: শি: মোঃ মিজানুর রহামান (১৭,৫৮০/-), ৩০নং মধ্য আওরাবুনিয়া স: প্রা: বিদ্যালয়ের প্রা: শি: জেসমিন আক্তার মূকুল (২১,৩৭০+২১,৩৭০), ১২নং উত্তর ছিটকী স: প্রা: বিদ্যালয়ের প্রা: শি: খাদিজা আক্তার (২১,৩৭০+২১,৩৭০/-), আউরা জয়খালী স: প্রা: বিদ্যালয়ের সহ: শি: অজিত কুমার নাথ (১৬,২৮০+১৭,১০০+১৭,১০০/-), ১২৮ নং দক্ষিণ চেঁচরী কমিউনিটি বিদ্যালয়ের সহ: শি: সেলিনা খানম (১৬,২৮০+১৭,১০০+১৭,১০০/-), ১০নং পূর্ব মহিষ কান্দী স: প্রা: বিদ্যালয়ের সহ: শি: অনিল কৃষ্ঞ দাস (১৬,২৮০+১৭,১০০+১৭,১০০/-), ১১৭ নং ছোনাউটা স: প্রা: বিদ্যালয়ের প্র: শিক্ষক মুকূল আক্তার (২০,৪৪০+২০,৪৪০ +২০,৪৪০/-) ও ১নং উত্তর বাঁশবুনয়া স: প্রা: বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহারুম মিয়া (২০,৪৪০+২০,৪৪০+২০,৪৪০/-)।

এ বিষয় কাঠালিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মোজাম্মেল জানান, অভিযুক্ত শিক্ষকরা শোকজ নোটিশের সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। তাই অল্প সময়ের মধ্যে আত্মসাৎ করা সরকারি টাকা কোষাগারে জমা দেয়ার জন্য নোটিশ দেয়া হবে এবং পরবর্তী সময়ে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করা হবে।

ঝালকাঠি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আমিনুল ইসলাম জানান, জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মোস্তফা কামালকে এ বিষয়ে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। করোনার কারণে তদন্তে বিলম্ব হচ্ছে। তবে তদন্ত রিপোর্ট পেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest