ঢাকা ৪ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২১ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৮:১৭ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৩, ২০২১
গোলাম মোস্তফা খান,খুলনা।
দাকোপ উপজেলায় পল্লব বিশ্বাস নামের ধুরন্ধর এক শিক্ষককে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সুবিধা না দেয়ায় শিক্ষা কর্মকর্তাকে ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ষড়যন্ত্রের শিকার উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অহিদুল ইসলাম। তার দাবি শুধুমাত্র অনৈতিক প্রস্তাবে রাজী না হওয়ার কারণে এহেন ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি।
শিক্ষা কর্মকর্তারা জানান, শিক্ষার মান উন্নয়নে সম্প্রতি স্কুল ড্রেস তৈরির জন্য মায়েদের মুঠোফোনে ১ হাজার করে টাকা দেয়া হয়। এতে দাকোপ উপজেলায় ১২ হাজার ৪৩৩ জন শিশুর স্কুল ড্রেস তৈরি বাবদ ১ কোটি ২৪ লাখ ৩৩ হাজার টাকা মায়েদের মুঠোফোনের মাধ্যমে বরাদ্দ আসে। সহকারী শিক্ষক পল্লব কুমার বিশ্বাস নিজে ওই টাকার স্কুল ড্রেস তৈরির দায়িত্ব নেয়ার জন্য শিক্ষা কর্মকর্তাকে অনৈতিকভাবে চাপ সৃষ্টি করেন। অনৈতিক দাবি সমর্থন না করায় শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে অসংলগ্ন আচরণ ও তার পরিবারের সদস্যদেরকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন এই শিক্ষক।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শিক্ষা কর্মকর্তা অহিদুল ইসলাম দাকোপ উপজেলায় ২০১৯ সালের ৩ মার্চ যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে শিক্ষার মান উন্নয়নে বৃটিশ আমলের অবহেলিত বানীশান্তা যৌনপল্লীর ঝরে পড়া শিশুদের স্কুলে ভর্তিপূর্বক পড়ালেখা করার লক্ষ্যে আলাদা বহুতল বিশিষ্ট হোস্টেল নির্মাণ, শিশুর মননশীলতা বৃদ্ধি, শিক্ষার প্রতি আর্কষণ সৃষ্টি, সমাজে ধনী ও দরিদ্র পরিবারের শিশুর মধ্যে ভেদাভেদ দূরীকরণ এবং ভবিষ্যতে উন্নত মানসিকতা সম্পন্ন নাগরিক হওয়ার স্বপ্ন দেখার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন স্কুলের প্রায় ৪ হাজার শিশুকে একই ডিজাইনের টাইসহ স্কুলড্রেস বিতরণ করেন।
শিক্ষক মুকুল সরদার বলেন, সহকারী শিক্ষক পল্লব কুমার বিশ্বাস দীর্ঘদিন ধরে সরকারি ও জাতীয়করণকৃত শিক্ষকদের বেতন ভাতা, টাইমস্কেল, উচ্চতর গ্রেডসহ বদলি বাণিজ্য করে হাতিয়ে নেন লাখ লাখ টাকা। পল্লব বিশ্বাস সাধারণ শিক্ষকদের জিম্মি করে উৎকোচ লেনদেনের সুবিধার্থে শিক্ষা কার্যালয়ের পাশে নির্মাণ করেন সাবশিক্ষা কার্যালয় যা উৎকোচ লেনদেনের নিরাপদ দপ্তর। এছাড়া প্রাক প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষা উপকরণ, স্লিপ কার্যক্রমের উপকরণ, স্কুল কনটিজেন্সির মালামাল ও করোকালীন তাপমাত্রা মাপার যন্ত্রসহ বিভিন্ন ধরনের উপকরণ নিজের দোকান থেকে কিনতে বাধ্য করেন প্রধান শিক্ষকদের।
শিক্ষক মুজাহিদ জানান, শিক্ষক পল্লব বিশ্বাস শিক্ষা কর্মকর্তার সম্মানহানি করার জন্যে মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করে সংবাদ প্রকাশ করায়। যা আমাদের শিক্ষকদের জন্য খুবই লজ্জাজনক।
বিষয়টি জানার জন্য চালনা বাজার এনসি ব্লু-বার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পল্লব কুমার বিশ্বাসের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোনো সংযোগ পাওয়া যায়নি। ফলে তার মন্তব্য তুলে ধরা সম্ভব হয়নি।
দাকোপ উপজেলার সাবেক দুই শিক্ষা কর্মকর্তা জিএম আলমগীর কবির ও শেখ আব্দুল গণি মুঠোফোনে জানান, আমাদের কার্যকালে সাধারণ শিক্ষকদের জিম্মি করে পল্লব কুমার বিশ্বাস সকল কাজে শিক্ষকদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের উৎকোচ আদায় করেন। কর্মকর্তাদের হয়রানি ও মানহানি করতে তাদের বিরুদ্ধে নামে বেনামে বিভিন্ন অভিযোগ দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করতেন, যা তার স্বভাবে পরিণত হয়েছে।
তারা আরও জানান, তিনি অধিকাংশ সময় স্কুলে অনুপস্থিত থাকেন। এসময় তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিলে তিনি রাজনৈতিক আশ্রয়ে রক্ষা পেতেন। কর্মকর্তাদের সাথে অসদাচরণ প্রদর্শনপূর্বক জীবননাশের হুমকি দিতেন। এছাড়া সমিতির নাম ভাঙিয়ে সাধারণ শিক্ষকদের কাছ থেকে ঘুষ, চাঁদাসহ উৎকোচ আদায় করে থাকেন। এ ছাড়া এলাকার অনেকেরই অভিযোগ বিগত ১৫ বছরেরও বেশি সময়কাল তার অস্তিত্তহীন,কোন কার্যক্রমহীন একটি ক্লাবের নামে মুক্তিযোদ্ধা পরিবার পরিচয় দিয়ে এ যাবৎ কাল এমপিদের কাছ থেকে অনেকটন চাল,গম,টাকা নিয়ে নিজে সম্পুর্ন আত্তসাত করেছে। যা পিআইও অফিসে তদন্ত করলে সত্যতা মিলবে।ধুরন্ধর এ পল্লব নানা সুবিধা নিতে অফিসে চাপ সৃষ্টি করে অফিস রাজি না হলে তখন রাজনৈতিক ও সামাজিক অংগনের ন্যায় তখন সাম্প্রদায়িক ইস্যু তুলে তার অনুগত খুলনার চবহ্নিত ২/৩ জন সাংবাদিকদের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে সংবাদ প্রকাশ করায়,সাম্প্রদায়িক সঙগঠনের নেতাদের কাছে দৌড়াদৌড়ি করে।গতবছর এমন সুযোগ নিয়ে সরকারি জায়গা পর্যন্ত দখলের চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়।যা মামলা পর্যন্ত গড়ায়।বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের আশু দৃষ্টি আকর্ষন ও সাম্প্রদায়িক বিষবাস্প ছড়ানোর নায়ক নামের শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহনের জোর দাবি জানিয়েছেন দাকোপের অধিকাংশ শিক্ষক সমাজ তথা রাজনৈতিক মহল।
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST