ঢাকা ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২ আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:২৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১২, ২০২৩
ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ
ঝালকাঠির নলছিটি পৌরসভার কান্ডপাশা এলাকায় সোমবার (১১ডিসেম্বর) বিকালে পানিতে ডুবে চার বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায় বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের টাওয়ার নির্মানের জন্য করা পাইলিংয়ের কাজ দীর্ঘদিন যাবত বন্ধ থাকায় এর গর্তের মধ্যে পানি জমে পুকুরের মতো তৈরি হয়েছে।চতুর্দিকে বসতবাড়ি থাকায় এবং ঐ স্থানটি খোলামেলা এবং রৌদ্রজ্বল হওয়ায় বাচ্চারা সেখানে নিয়মিত খেলতে যায়।তেমনি এই বাচ্চাটিও সেখানে খেলেতে গেলে সবার অজান্তেই সে জমে থাকা পানিতে পরে যায়।বিকালে প্রতিবেশী কহিনুর বেগম সেখানে কাপড় আনতে গেলে বাচ্চাটিকে ভেসে থাকতে দেখেন।এরপর তাকে উঠিয়ে চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের ভাই উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, টাওয়ারটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে প্রায় দুই বছর আগে।কাজের ধীরগতির কারনে আমরা তাদেরকে বারবার সতর্কও করেছি যাতে দ্রুত কাজটি সম্পন্ন হয়।কেননা চতুর্দিকে বসতঘর থাকায় প্রায় দশ পনেরটি বাচ্চা রয়েছে যারা সাতার জানেন না,তারা পাইলিংয়ের গর্তে জমে থাকা পানি পরে একটি দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।কিন্তু টাওয়ার নির্মানের লোকজন আমাদের কথায় পাত্তা দেয়নি,কোনো নিরাপত্তা বেষ্টনী ছাড়াই তারা কাজ ফেলে রেখে চলে গেছে।তাদের এই খামখেয়ালির কারনে আজকে আমার বোনটা মারা গেলো,এর বিচার কার কাছে চাইবো?
স্থানীয় ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম বলেন,বারবার নিরাপত্তা বেষ্টনী দিতে বললেও নির্মানকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তা শোনেনি।আমরা তাদেরকে বুঝিয়েও বলেছিলাম দ্রুত কাজ শেষ করে অন্তত এই ঝুকি থেকে যাতে রেহাই পাওয়া যায়।কিন্তু তারা ইচ্ছাকৃতভাবে অবহেলা করেছে,তাদের অবহেলার বলি হলো এই মাসুম বাচ্চাটি।
সরেজমিনে দেখা যায়,টাওয়ার নির্মানের চারটি পাইলিংয়ের পাশের মাটি প্রায় ৫-৬ ফুট গভীরতায় খুড়ে রাখা হয়েছে দীর্ঘদিন আগে।তাতে বর্ষার পানি জমে একটি জলাশয়ের মতো তৈরি হয়েছে।এর চতুর্দিকে মাটি এবং পাথরের ঢিবি থাকায় তা একরকম পিচ্ছিল কাদা হয়ে রয়েছে।পাশে রাখা পাথরের উপরে আশেপাশের নারীরা কাপড় শুকাতে দেন,এবং বাচ্চারা বিকালের রোদে সেখানে খেলতে যায়।নিরাপত্তা বেষ্টনী না থাকায় যায়গাটি ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
টাওয়ারের পাইলিংয়ের গর্তের পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে ওজোপাডিকোর বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।তাকে খুদেবার্তায় বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST