ঢাকা ১৮ মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৪ চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:১৩ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৯, ২০১৯
হাসান আরেফিন, ঝালকাঠি
দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে শনিবার মধ্যরাতে ঘুর্ণিঝড় বুলবুল আঘাত হানতে পারে এমন আশঙ্কায় ঝালকাঠির ঘূর্নিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে ভয়ার্তদের ভিড় রয়েছে। শনিবার রাত ৯টা পযর্ন্ত জেলার ৪ উপজেলায় থাকা ৭৪টি আশ্রয়কেন্দ্রর বেশিভাগই দূর্গত মানুষের চাপ বাড়তে দেখা গেছে।এ পযর্ন্ত জেলার সাত হাজার দূর্গত মানুষ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র ও স্কুল, কলেজ ও পাকা স্থাপনায় নিরাপদে স্থান নিয়েছেন। রাত গভীর হওয়ার সাথে সাথেই ভয় বৃদ্ধি পাচ্ছে উপকুলীয় জেলা ঝালকাঠির মানুষের।
নভেম্বর মাস উপকুলীয় মানুষের জন্য একটি ভর্য়াত মাস। স্বাধীনতার পর সবচেয়ে বড় ঝড় সিডর আঘাত হেনেছিলো ২০০৭ সনে ১৫ নভেম্বর। ১৯৬০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত দেশে ৩৬টি ঘুর্নিঝড় আঘাত হাতে তার মধ্যে ০৯টি মারাত্মক ঝড় আঘাত হানে এই নভেম্বরে।
জানমালের নিরাপত্তায় নদী তীরবর্তি এলাকার বাসিন্দা এবং গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র পরিবারের লোকজন ঘূর্নিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে শনিবার দুপুর থেকেই আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে আশ্রিতদের শুকনো খাবার, মোমবাতি, দিয়াশলাইসহ বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী দেয়া হচ্ছে। তবে আশ্রিতদের সংখ্যার চেয়ে ত্রাণের পরিমাণ অপ্রতুল বলে অভিযোগ ভুক্তভোগিদের।
গত শুক্রবার থেকে থেমে থেমে দমকা হাওয়া ও বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। জেলার সুগন্ধা ও বিষখালিসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৩/৪ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। অভ্যন্তরিন এবং দূর পাল্লার সকল রুটে নৌযান ও দূরপাল্লার স্থলযান চলালচ বন্ধ রাখা হয়েছে।
শনিবার দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী জেলার বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি সেখানে উপস্থিত লোকজনের সাথে কথা বলেন। জেলা প্রশাসক জানান , দুর্যোগ মোকাবেলায় নদী তীরবর্তি জনসাধারণকে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ায় জন্য শুক্রবার সকাল থেকে মাইকিং করা হয়েছে। এছাড়া জেলায় ভয়ার্তদের আশ্রয়নের জন্য প্রস্তুতকৃত ৭৪ টি ঘুর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ, রেডক্রিসেন্ট, ফায়ারসার্ভিস ও স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। পুনর্বাসনের জন্য তাদের খাদ্যসামগ্রীও দেয়া হয়েছে। খোলা হয়েছে ৫টি কন্ট্রোলরুম। বাতিল করা হয়েছে সকরারি কর্মকর্তা কর্মচারিদের ছুটি। পরবর্তি পরিস্থিতি মোকাবেলায় পর্যাপ্ত শুকনা খাবার মওজুদ রয়েছে বলেও জানান জেলা প্রশাসক।
সারাদিন অবিরাম বর্ষনে পৌর শহরের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ চরম ভোগান্তিতে পরেছে। সুগন্ধা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বসতবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় নদী তীরবর্তী মানুষ অসহায় অবস্থায় পরেছে। ঝালকাঠি থেকে ঢাকাগামী লঞ্চ বন্ধ রয়েছে। নদী পারাপারে ট্রলার ও নৌকা কম চলাচল করছে।
এদিকে জেলার দূর্যোগ প্রবণ ও বঙ্গোপসাগরের নিকটবর্তী উপজেলা কাঁঠালিয়ায় প্রশাসন ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। তবে প্রায় ১ লাখ ২৪ হাজার মানুষের বসবাস এ উপজেলায় মাত্র ১৩টি সাইক্লোন সেল্টার রয়েছে। যা খুবই অপ্রতুল। উপজেলায় ১৩টি সাইক্লোন সেল্টারসহ ১৫২টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এর মধ্যে ১১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় , ২২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় , ৪টি কলেজ ও ৩টি মাদ্রাসা। উপজেলায় একটি নিয়ন্ত্রন কক্ষ খোলা হয়েছে। বিষখালি নদীর তীরবর্তী শৌলজালিয়া ইউনিয়নের মানুষ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আকন্দ মোহম্মদ ফয়সাল উদ্দিন বলেন , উপজেলার আওরাবুনিয়া আশ্রয় কেন্দ্রে ইতিমধ্যেই কয়েক হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST