ঢাকা ১৬ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩১ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:৫০ অপরাহ্ণ, জুন ১, ২০২০
শফিউর রহমান কামাল বরিশাল ব্যুরোঃ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণ, গণজমায়েত বন্ধ ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণে শুরু থেকেই বরিশাল জেলা প্রশাসন নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে। তারি ধারাবাহিকতায় আজ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে সরকার কর্তৃক গণপরিবহন ও লঞ্চ চলাচলের অনুমোদন প্রদান করা হয়েছে। আজ ১ জুন বিকাল থেকেই বরিশাল লঞ্চ ঘাটে ছিলো ঢাকামুখী মানুষের ঢল। স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চগুলো যাত্রী তুলছে কিনা এবং লঞ্চঘাটে কতটা স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে তা মনিটরিং করার জন্য বরিশালের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এস, এম, অজিয়র রহমান-এর নির্দেশনায় লঞ্চঘাট এলাকায় বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অবস্থান নেন বরিশাল জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জিয়াউর রহমান। এসময় তিনি বিআইডব্লিউটি-এর যুগ্ন পরিচালক আজমল হুদা মিঠুকে সাথে নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে প্রতিটি লঞ্চের সামনে ও ডেকের অভ্যন্তরে সচেতনামূলক মাইকিং করেন। উপচে পড়া ভীড়ে অধিক স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে এসময় লঞ্চের ডেকে যাত্রী তোলা বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং উপস্থিত লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এসময় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এর একটি টিম এবং নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে সাথে নিয়ে লঞ্চঘাটে যারা অপ্রয়োজনীয় ঘুরাঘুরি করছিলেনে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয় এবং লঞ্চের অভ্যন্তরে অধিক জনসমাগম এড়াতে কিছু যাত্রীকে ফেরত পাঠানো হয়। বরিশাল লঞ্চ টার্মিনাল থেকে বরিশাল থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ৬ টি লঞ্চ ছেড়ে যায় গ্রীন লাইন ওয়াটার বাস, সুন্দরবন, অ্যাডভেঞ্চার, কুয়াকাটা, ফারহান এবং সুরভী। পরবর্তীতে সার্বিক স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় নির্ধারিত সময়ের প্রায় একঘন্টা আগেই লঞ্চগুলো ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর উপস্থিতিতে বিআইডব্লিউ কর্তৃক মাইকিং করে যাত্রী এবং লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। যাত্রীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনা করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য উপস্থিত অনেক যাত্রীরা জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতি সাধুবাদ জ্ঞাপন করেন। জনস্বার্থে বরিশাল জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। এদিকে আজ সকালে সীমিত আকারে যাত্রী পরিবহন করার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের সাথে লঞ্চ বাস মালিকদের সাথে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় যাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিবেচনা করে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সরকারের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী গণপরিবহনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহ পরিচালনা করতে হবে। বাস এবং লঞ্চ অবশ্যই যাত্রার পূর্বে এবং যাওয়ার শেষে অবশ্যই জীবানুনাশক পানি স্প্রে মাধ্যমে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। সকলেই মাক্স এবং যথাযথ সুরক্ষার সামগ্রীর ব্যবহার করবে। কোন যাত্রী বা পরিবহন এর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মাক্স ব্যবহার না করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বাসে ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করতে হবে। গাড়ির সাথে রুট হিসেবে নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা লাগিয়ে দিতে হবে। বাসের ক্ষেত্রে পূর্বনির্ধারিত ভাড়ার সাথে সীমিত সময়ের জন বর্তমান প্রস্তাবিত ৬০% পার্সেন্ট ভাড়া বৃদ্ধি করতে পারবে, তবে ৬০ পার্সেন্টর অধিক ভাড়া আদায় করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। লঞ্চের ক্ষেত্রে ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী যাত্রী পরিবহন করতে পারবে। যাত্রার পূর্বেই যাত্রীদের কেবিন এবং ডেকের টিকিট সংগ্রহ করতে হবে। শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে ডেকে বসার ব্যবস্থা করতে হবে। লঞ্চ টার্মিনালের বাইরে ডেকের যাত্রীদের জন্য আলাদা ভাবে টিকিট কাউন্টারের ব্যবস্থা করতে হবে। অসুস্থ যাত্রী পরিবহন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সংশ্লিষ্ট দপ্তর সহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী মনিটরিং কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। সিদ্ধান্ত ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST