ঢাকা ৮ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৩ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৮:০৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৩, ২০২০
সাব্বির হোসেন সাজিদ,
চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
চাঁদপুর সদর উপজেলার তরপুরচন্ডী ইউনিয়নে জাহাঙ্গীর দর্জি (৪০) নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে পঞ্চম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী (১২)-কে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ধর্ষণে ওই কিশোরী ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে তাকে ও তার পরিবারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক গর্ভপাত করা হয়। এরপর ওই পরিবারকে আইনের আশ্রয় না নিতে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। খবর পেয়ে শনিবার (১১ জুলাই) পুলিশ ওই এলাকায় গেলেও অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর ও ভিকটিমের পরিবার কাউকেই পায়নি।
ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্থানীয় একটি চক্র উঠেপড়ে লেগেছে বলে জানা গেছে। তারা কিশোরীর পরিবারকে প্রথমে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলে আইনের আশ্রয় নেওয়া থেকে বিরত রাখে। এই সুযোগে এক সপ্তাহ আগে শহরের একটি হাসপাতালে এনে কিশোরীর জোরপূর্বক গর্ভপাত করায়। এরপর থেকেই তারা নানাভাবে কিশোরীর পরিবারকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
ধর্ষণের শিকার কিশোরী জানিয়েছে, ‘সে বাড়ির পাশে খেলতে গেলে জাহাঙ্গীর দর্জি তাকে টাকার লোভ দেখিয়ে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। এরপর তাকে ধর্ষণ করে। এভাবে সে আমাকে ভয় দেখিয়ে আরও কয়েকবার এই কাজ করেছে। আমি যাতে কাউকে না বলি এজন্যে ভয় দেখিয়েছে।’
কিশোরী মা বলেন, ‘আমার মেয়েটিকে লোভ ও ভয়ভীতি দেখিয়ে জাহাঙ্গীর বহুবার ধর্ষণ করে। পরে তার শারীরিক পরিবর্তন দেখে জিজ্ঞেস করলে সে বিষয়টি স্বীকার করে। পরে জাহাঙ্গীরের স্ত্রীর এসে আমার মেয়েকে চাঁদপুরে নিয়ে গর্ভপাত করায়। আমি বিষয়টি ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার রুহুল আমিন সুকদার, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মোস্তফা মাল, বিএনপি নেতা হাসান দেওয়ানসহ স্থানীয়দের জানিয়েছি। আমরা অসহায় বলে বিচার পাচ্ছি না। আমরা যাতে মামলা না করি তার জন্যে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আমি এই লম্পটের বিচার চাই।’
এ বিষয়ে মেম্বার রুহুল আমিনের মোবাইলে কয়েকবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
তরপুরচন্ডী ইউপি চেয়ারম্যান ইমাম হাসান রাসেল গাজী বলেন, ‘ভিকটিমের পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি আমাকে জানানো হয়নি। দু’দিন আগে বিষয়টি জানতে পেরেছি। ঘটনাটি প্রায় ১৫ দিন আগের হলেও স্থানীয় মেম্বার বিষয়টি আমার কাছে গোপন করেছেন।’
এ বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদের সৃষ্টি হলে সোমবার(১১ জুলাই) চাঁদপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জনাব জাহেদ পারভেজ চৌধুরী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে শনিবার(১১ জুলাই) বিকালে চাঁদপুর সদর মডেল থানাড পুলিশের একটি টিম ওই এলাকায় পাঠাই। কিন্তু আমাদের টিম সেখানে গিয়ে দেখে ভিকটিমের বাড়ি তালা মারা। অভিযুক্ত ব্যক্তিও উধাও। আমরা চেষ্টা করছি ভিকটিমের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে।
ইতিমধ্যেই আমরা চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছি, সালিশ-দরবার করে যারা ঘটনা ধামাচাপা দিতে চেয়েছে তাদের কে শনাক্ত করেছি, অবৈধভাবে গর্ভপাত করিয়েছে যে হাসপাতাল সেটিও আমরা খুঁজে বের করেছি। অভিযুক্ত ব্যক্তিটিকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করা হবে ইনশাল্লাহ।”
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST