খুলনার কয়রায় অতিথি পাখি শিকারের মহোৎসব

প্রকাশিত: ৪:৪২ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৯, ২০২২

খুলনার কয়রায় অতিথি পাখি শিকারের মহোৎসব

গোলাম মোস্তফা খান, খুলনা।

উত্তরের হিমেল হাওয়ায় বইছে শীত। দেশে আসতে শুরু করেছে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি। উপকূলীয় অঞ্চল খুলনার কয়রা উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের নদী-নালা, খাল-বিল, ঝোপঝাড়, সুন্দরবনসহ গড়ে তোলা সামাজিক বনায়ন গুলোতে ডাহুক, তীরশুল, নলকাক, ভাড়ই, রাঙ্গাবনী, গাংচিল, রাতচড়া, হুটটিটি, হারগিলা, বালিহাঁস, সরালি কাস্তে, হুরহুরসহ বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে। সেই সাথে অপতৎপরতা বেড়েছে চোরা শিকারীদের। শীতের শুরু থেকেই এ অঞ্চলে চলছে পাখি শিকারের মহোৎসব।
নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বিষটোপ কিংবা ফাঁদ পেতে অবাধে শিকার করা হচ্ছে অতিথি পাখি। এতে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাবসহ অতিথি পাখির আগমন দিন দিন কমে যাচ্ছে। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এক শ্রেণীর অসাধু পাখি শিকার চালিয়ে যাচ্ছে।
উপজেলার বামিয়া ইউনিয়নের শ্রীফলতলা গ্রামের তহুরা পারভিন জানান, তার বসতবাড়ির সাথে দেড় বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের গাছ লাগানো হয়েছে। সেখানে অতিথি পাখির আগমন হয় শীতের শুরুতে। প্রতিদিন বিকালে পাখিরা যখন দিন শেষে ফিরে আসে তখন এলাকার মানুষ ছাড়াও বাইরের এলাকা থেকে অনেকে দেখতে আসেন। সবাই মুগ্ধ হয়ে পাখিদের নীড়ে ফেরা দেখে। কিন্তু এক শ্রেণীর অসাধু শিকারী রাতের আধারে এয়ারগান আর গুলতি দিয়ে পাখি শিকার করে। এজন্য গতবছর তার বাগান থেকে পাখি চলে গিয়েছিলো। এবছর রাতে তিনি পাহারাদেন। তবুও গভীর রাতে অনেকে তাকে ফাঁকি দিয়ে পাখি শিকার করে
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মানব কল্যাণ ইউনিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আল-আমিন ফরাদ বলেন, উপজেলার মদিনাবাদ লঞ্চঘাটের চর এলাকায় মানব কল্যাণ ইউনিটির পক্ষ থেকে সামাজিক বনায়ন গড়ে তোলা হয়েছে সেখানে হাজার হাজার অতিথি পাখি আশ্রয় নিয়েছে কিন্তু অসাধু কিছু শিকারি আমাদের ফাঁকি দিয়ে রাতের আধারে এয়ারগান দিয়ে পাখি শিকার করে।
পাখি প্রেমী সাইফুল বলেন, শীত মৌসুমে আমাদের দেশে আশ্রয় নেওয়া অতিথি পাখিদের কিছু অসাধু শিকারি রাতের আধারে ফাঁদ পেতে, গুলতি, ইয়ারগান ও দিনের বেলায় বিষ টোপ দিয়ে শিকার করছে। অতিথি পাখির আশ্রয়স্থলে প্রশাসনিক নজরদারির সাথে সাথে পাখি শিকার রোধে লিফলেট বিতরণ ও প্রচার প্রচারণা করলে অতিথি পাখি শিকার কমানো সম্ভব।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, বন্যাপ্রাণী নিধন দন্ডনীয় অপরাধ৷ অতিথি পাখি শিকার রোধে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকায় সভা করেছি। এবং সামাজিক বনায়নে পাখিদের আশ্রয়ের জন্য মাটির ভাড় বেঁধে বাসা তৈরি করেছি। কেউ যদি অতিথি পাখি শিকার করে তাকে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest