ঢাকা ১০ জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৬ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
গোলাম মোস্তফা খান,খুলনা
খুলনা মডেল মসজিদের সৌন্দর্যে মুগ্ধ সবাই
খুলনা: আধুনিক স্থাপত্যের সঙ্গে মুসলিম ঐতিহ্যের সংমিশ্রণে খুলনায় নির্মিত হয়েছে দৃষ্টি নন্দন ‘মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। ‘নান্দনিক নকশার আধুনিক এ মসজিদ কমপ্লেক্সটি আরব বিশ্বের আদলে নির্মিত।
যে কারণে মসজিদের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে দূর দূরান্ত থেকে মুসল্লিরা ছুটে আসেন এখানে। সন্ধ্যার পর মসজিদটির আলোকসজ্জায় এক মোহনীয় পরিবেশ তৈরি হয়।
মসজিদটি খুলনা আলিয়া মাদরাসা প্রাঙ্গণে নির্মিত হয়েছে। মিনারের গম্বুজ বাদে মসজিদটিতে আরও চারটি গম্বুজ রয়েছে।
এরমধ্যে একটি বড় গম্বুজ ও তিনটি ছোট। এ মসজিদে ৮০ জন নারীসহ মোট ১২শ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন। দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদ মুসল্লিদের নামাজ আদায়ে অনুপ্রাণিত করছে। নামাজ আদায়ের সঙ্গে সঙ্গে ইসলামিক সংস্কৃতি চর্চা ও মূল্যবোধের বিকাশ ঘটছে এ মসজিদকে কেন্দ্র করে।
আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধাসহ এ মসজিদটিতে রয়েছে ইসলামিক সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স পাঠাগার, গবেষণা কেন্দ্র, পবিত্র কোরআন হেফজ বিভাগ, শিশুশিক্ষা, মেহমানখানা, পর্যটকদের আবাসন, মৃত ব্যক্তির মরদেহের গোসলের ব্যবস্থা, ইমামদের প্রশিক্ষণ, গণশিক্ষা কেন্দ্র। যা ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে একটি পূর্ণাঙ্গ কমপ্লেক্স।
অত্যাধুনিক শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটি ২০২১ সালের ১০ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করেন।
খুলনা গণপূর্ত বিভাগ-১ এর সহায়তায়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতায় সরকারি অর্থায়নে নির্মাণ হয়েছে চার তলা বিশিষ্ট মসজিদটি।
খুলনা গণপূর্ত বিভাগ-১ সূত্র জানান, ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে মসজিদ কমপ্লেক্সটি। চারতলা ভবনটি দাঁড়িয়ে রয়েছে ৩৭ হাজার ৪০০ স্কয়ার ফুট জায়গা জুড়ে। ভবনটির নিচ তলায় রয়েছে গাড়ি পার্কিং, প্রতিবন্ধীদের জন্য নামাজের ব্যবস্থা। আরও রয়েছে ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ইসলামিক বুক স্টোর কার্যালয় ও মৃত ব্যক্তিদের গোসলের ব্যবস্থা। দ্বিতীয় তলায় প্রধান নামাজ ঘর, সম্মেলন কক্ষ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অফিস কক্ষ ও উন্মুক্ত ঈদগাহ।
তৃতীয় তলায় পর্যটকদের আলাদা কক্ষ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের রিসার্চ সেন্টার, ইসলামিক লাইব্রেরি, হিফজ ও মক্তবখানা। খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেমের থাকার জন্যও রয়েছে পৃথক কক্ষ। রয়েছে নারী-পুরুষের জন্য আলাদা অজুর ব্যবস্থা এবং পৃথক নামাজের কক্ষ। এছাড়াও অসুস্থ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা সিঁড়ি এবং শিশুদের জন্য শিক্ষাসুবিধা রয়েছে এই মডেল মসজিদে।
এ মসজিদের মুসল্লি জাহিদুর রাহমান বলেন, অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদটি দেখলেই প্রাণ ভরে যায়। পরিবেশটা অনেক সুন্দর। যে কারণে মুগ্ধ হয়ে এখানে নামাজ পড়তে আসি।
খুলনা জেলা মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা শফিকুল ইসলাম বলেন, অত্যন্ত সুন্দর ব্যবস্থাপনায় এ মসজিদে জুম্মার নামাজসহ ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়া হয়। এ বছর প্রথম বারের মতো তারাবির নামাজ পড়া হচ্ছে। দূর দূরান্ত থেকে মুসল্লিরা এসে স্বাচ্ছন্দ্যে নামাজ আদায় করছেন। তারা এখানে এসে সবাই খুশি। মসজিদটি অত্যন্ত সুন্দর। পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা রয়েছে। সুন্দর এ মসজিদের জন্য আমরা সবাই আনন্দিত।
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST