সরকারি খাল দখল করে চলছে মাছ চাষ,দুই ভাইয়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ গ্রামবাসী

প্রকাশিত: ২:৫৩ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৭, ২০২৩

সরকারি খাল দখল করে চলছে মাছ চাষ,দুই ভাইয়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ গ্রামবাসী

বিশেষ প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে দীর্ঘদিন ধরে সরকারি খাল দখল করে মাছ চাষসহ প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তার দু’পাশ দখল করে সবজি চাষ করেছেন দু’ভাই। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে গণস্বাক্ষর নিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন গ্রামরবাসী।

সোমবার(২৭ মার্চ) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার পায়রা নদীর পশ্চিমপাড় ঘেষে মির্জাগঞ্জ টু কানকির দিকে ওয়াপদার রাস্তা চলে গেছে। এতে ১নং মাধবখালী ইউনিয়ন ও ২ নং মির্জাগঞ্জ ইউনিয়ন সংযুক্ত সরকারি ভাটিচিরা ভাড়ানী খালটির মুখ আটকা পড়ে আছে। খাল আটকানো সুবিধা পেয়ে স্থানীয় ছোহরাব শিকদারের ছেলে শহিদ সিকদার(৪৫) ও নূর মোহাম্মদ সিকদার(৩৫) দখলে নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন এবং খাল সংলগ্ন রাস্তার পাশে তাদের কোন জমি জমা না থাকলেও বিভিন্ন ধরনের গাছপালা ও সবজির চাষ করে আসছেন। ওই রাস্তা দিয়ে মা-বোনেরা সকাল-বিকাল চলাচল করলে তাদেরকেও নির্যাতন করেন তারা। এ নিয়ে পটুয়াখালী বিজ্ঞ আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে(৫৭১/২০১০) মামলা চলমান রয়েছে। এমনকি নিজেরা এসব গাছপালা ও সবজি নষ্ট করে উল্টো এলাকাবাসীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসাতে উপজেলা পরিষদে অভিযোগ(স্মারক নং-১৫২) দেন তারা। সম্প্রতি বাড়ির লোকজনের সাথে পুর্ব শত্রুতার জের ধরে রাতের আঁধারে স্থানীয় ইসমাইল হোসেনের ছেলে সাইফুলকে কুপিয়ে জখমের মামলায় জেল খেটেছেন ওই দুই ভাই। এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে যদি তাদের এসব গাছপালা বা সবজি গ্রামবাসীর গরু ছাগল ছুটে গিয়ে খায়, তবে গ্রামবাসীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা জরিমানা গ্রহন করেন তারা।

জাফর মোল্লা নামের এক দিনমজুর জানান, আমার সাথে বদলার চুক্তি হয়েছে দৈনিক ৬শত টাকা করে। কাঁঠালতলী বাজারে গিয়ে হাবিব চৌকিদার, সোহাগ দফাদার, শাহজাহান হাওলাদারসহ অনেক লোকের সামনে আমাকে মারধর করে দৈনিক ৫শত টাকা করে দিছে। ওরা এত খারাপ।

প্রতিবন্ধী সোহাগ মৃধা জানান, এই রাস্তার পাশের জমিজমা আমরা লীজ নিতে পারি না। তাতে ওরা আমাদের হুমকি ধমকি দেয়।

তবে এ বিষয়ে অভিযোগ অস্বীকার করে দখলদার নূর মোহাম্দ শিকদার বলেন, তৎকালীন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমাদের এগুলো চাষাবাদ করতে বলেছেন। রাস্তার পাশে যাদের জমি তারা তখন বাঁধা দেয় নাই। এখন তারা চাইলে রাস্তার পাশের তাদের জমিতে তারা গাছপালা লাগাবে।

খাল দখলের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে বলেন, এখানে সরকার যদি স্লুইসগেট দেয় তবে আমরাও আমাদের দেয়া নিজস্ব বাঁধ কেটে দিয়ে পানির প্রবাহ তৈরি করবো এবং এতে আমাদেরও জমিজমা চাষাবাদ করা সুবিধা হবে।

ওয়াপদার রাস্তা দিয়ে সরকারি খালের মুখ বাঁধ দিয়ে পানির প্রবাহে বন্ধ করা নিয়ে প্রশ্ন করলে সাবেক চেয়ারম্যান আমীর হোসেন বলেন, ওই সময় ওয়াপদার ফান্ডে পর্যাপ্ত টাকা না থাকার কারনে খালটির মুখে একটি স্লুইসগেট স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। আবার বেড়িবাঁধ রাস্তাটি নির্মাণ না হলে বন্যায় এলাকাবাসী ক্ষতিগ্রস্থ হতো। তাই রাস্তাটি নির্মাণ করেছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(অ.দা.) মো. সাইফুর রহমান বলেন, খাল দখলের বিষয়ে গ্রামবাসীদের স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগপত্র পেয়েছি। সরকারি খাস জমি ও খাল দখল করে কেউ মাছ চাষ করতে পারেন না। তদন্ত সাপেক্ষে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


মুজিব বর্ষ

Pin It on Pinterest