দেশে-বিদেশে সমালোচিত হলেও জন্মস্থানে এখনো এমপি পাপুল ‘মানবতার ফেরিওয়ালা’

প্রকাশিত: ৬:৪৮ অপরাহ্ণ, জুন ২৫, ২০২০

দেশে-বিদেশে সমালোচিত হলেও জন্মস্থানে এখনো এমপি পাপুল ‘মানবতার ফেরিওয়ালা’

আলোকিত সময় ডেস্ক ঃএই মুহুর্তে করোনার পাশাপাশি আলোচিত ইস্যু এমপি কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল। দেশী-বিদেশী প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে সরব আলোচনা। ফেসবুক ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে কেউ পক্ষে আবার কেউবা বিপক্ষে কথা বলছেন। সবার মুখে মুখে পাপুল ইস্যু। সকলের জিজ্ঞাসা কোথায় গিয়ে ঠেকবে এ ইস্যুর সমাধান।

তবে সর্বত্র আলোচিত-সমালোচিত হলেও নিজ জন্মস্থান রায়পুরের মানুষের কাছে এখনো তিনি ‘মানবতার ফেরিওয়ালা’। কারণ হিসেবে তারা বলেছেন, স্বাধীনতার পর এই প্রথম আওয়ামীলীগের জেলা, উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড থেকে গ্রাম পর্যন্ত তৃণমূল নেতাকর্মীরা সংগঠন পরিচালনা ও নিজেদের সুখে-দু:খে কোনো নেতার দ্বারা আর্থিকভাবে ব্যাপক মূল্যায়িত হতে পেরেছেন। উপজেলা থেকে ওয়ার্ড পর্যন্ত দলকে পরিচালনা করতে খরচ যুগিয়েছেন এমপি। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার এক বছরের মধ্যে যতো উন্নয়ন কাজ ও বরাদ্ধ এসেছে তা থেকে তিনি এক টাকা কমিশন নিয়েছেন এমন তথ্য তাঁর ঘোর বিরোধীরা বলতে পারছেন না। ২০১৬ সনে এখানে আগমন থেকে ২০২০ সনের গ্রেফতারের আগ মুহুর্ত পর্যন্ত তারা দু’হাতে অর্থ ছিটিয়েছেন সংসদীয় আসনের দলীয় নেতাকর্মীসহ আপামর জনসাধারণের পিছনে। এমপি পাপুল কুয়েতে অবস্থান করায় করোনায় ১৯টি ইউনিয়ন ও রায়পুর পৌরসভায় খাদ্য সামগ্রী ও নগদ অর্থ বিলি করেছেন এমপির স্ত্রী ও সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলাম সিআইপি। সহায়তা প্রদান করেছেন পরিবহন শ্রমিক, ইমাম-মুয়াজ্জিন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজনকে। এ কারণে এখানকার লোকজনের মাঝে তাদের এলাকার বধু সেলিনা ইসলামের জন্যও রয়েছে বিশেষ কদর।

উপজেলার স্বনামধন্য কাজী পরিবারের সন্তান হিসেবে তিনি সকলের প্রশংসায় ভাসছেন। তারা মানতেই চাচ্ছেন না তাদের সহজ-সরল প্রকৃতির ছেলেটার বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্র ও প্রচারণা। ক্যারিশমাটিক রাজনীতি, নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করা, ইউনিয়ন থেকে ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত আধুনিক সুবিধা সম্বলিত অফিস স্থাপন, অফিস খরচ চালানো, সকল অনুষ্ঠানে পৃষ্ঠপোষকতা করাসহ নানান কারণেই তিনি স্থানীয় রাজনীতির সুপার হিরো।

তাঁর বিগত দিনের দান-অনুদান ও দলীয় কার্যক্রম পরিচালনায় এখনো তিনিই স্থানীয় ভোটার ও জনগণের মুখে মুখে। রাজনীতি ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে এখনো প্রশংসিত হচ্ছে পাপুলের দান-অনুদান। তৃণমূল থেকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল পর্যন্ত তিনি অর্থ দিয়েছেন অকৃপণভাবে।

গত এক সপ্তাহ ধরে লক্ষ্মীপুর ও রায়পুরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্রই পাওয়া গেছে।প্রতিটি ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের দলীয় অফিস নেওয়া, ভাড়া প্রদান, অফিসের যাবতীয় আসবাবপত্রসহ টেলিভিশনের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। ১০টি ইউনিয়নে (৯০টি ওয়ার্ডে) ৫৫ হাজার টাকা করে ৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, প্রতি ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের অফিস করার জন্য ১০ লক্ষ টাকা, ১০টি ইউনিয়নে ৫২ ইঞ্চির ১০টি এলইডি টিভি দিয়েছেন। প্রতিটি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে মোটরসাইকেল দিয়েছেন। ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে প্রতিটি ইউনিয়নে গরু বিতরণকরে কাঙ্গালী ভোজের মাধ্যমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী পালন করেছেন। দলীয় কর্মীদের মাঝে মোটরসাইকেল প্রদানসহ আর্থিক অনুদান দিয়ে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। ঈদের সময় দলীয় নেতা-কর্মীদের ঈদ সামগ্রীসহ নগদ টাকা প্রদান করেছেন। এছাড়াও রায়পুর থানা পুলিশ প্রশাসনের কার্যক্রমকে আরো বেশি গতিশীল করতে একটি পিকআপভ্যান ও দুইটি মোটরসাইকেল দিয়েছেন। প্রতিটি ইউনিয়নে গ্রাম পুলিশদেরকে ১০টি বাই-সাইকেল, অসহায় নারীদের সেলাই মেশিন প্রদান করেছেন। লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ লাইনে একটি এ্যাম্বুলেন্স ও রায়পুর পৌরসভাকে একটি এ্যাম্বুলেন্স প্রদান করেছেন। অনুদান দিয়েছেন ঢাকা জাতীয় প্রেস কাব, ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটি, লক্ষ্মীপুর প্রেস কাব, রায়পুর প্রেস কাব, রায়পুর রিপোটার্স কাব, রায়পুর শিক্ষক সমিতি, রায়পুর ইমাম মুয়াজ্জিন সমিতি ও মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন পেশাজীবীদেরকে।

এমপি পরিবারের অভিযোগ, দেশি-বিদেশী বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের শিকার কুয়েতে আটক থাকা প্রবাসী ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশের সাংসদ শহীদ ইসলাম পাপুল। কুয়েত সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে পাপুলের কোম্পানি ’মারাফি কুয়েতিয়ার’ ব্যবসায়িক চুক্তি হওয়ায় সেদেশে তার প্রতিদ্বন্ধীরা তার বিরুদ্বে একজোট হয়েছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশের রাজনীতিতেও ব্যাপক আলোচিত পাপুলের বিপরীতে রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক পরিমন্ডলে বিভিন্ন শত্রুর সৃষ্টি হয়েছে। এমনটাই দাবি করেছেন সংরতি নারী আসনের এমপি ও পাপুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম।

তিনি বলেন, পাপুলকে ডেকে নিয়ে কয়েকদিন জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আটক রেখেছে কুয়েত পুলিশ। প্রকৃতপে আমার স্বামী মোহাম্মদ শহীদ ইসলাম পাপুল কুয়েতে একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তিনি খ্যাতনামা মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও। এই কোম্পানিতে কুয়েতি অংশীদারত্ব রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানে ১৫ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি কর্মরত। দীর্ঘদিন ধরে তিনি কুয়েতের সঙ্গে ব্যাবসা পরিচালনা করে আসছেন। সম্প্রতি কুয়েতের ’ক্রিমিনাল এভিডেন্স ডিপার্টমেন্ট’ থেকে ’গুড কন্ডাক্ট’ সার্টিফিকেটও পেয়েছেন পাপুল। এতে পাপুলের ব্যবসায়িক সুনাম আরও বাড়তে থাকে।

সেলিনা ইসলাম বলেন, পাপুল একজন গর্বিত রেমিট্যান্স যোদ্ধা। বাংলাদেশের অর্থনীতির সবচেয়ে শক্তিশালী চালক হলো ফরেন রেমিট্যান্স। আর পাপুল সেই রেমিট্যান্সই দেশে নিয়ে আসছেন। অথচ একজন সৎ ব্যবসায়ী এবং সুস্থ ধারার রাজনীতিবীদের সফলতাকে ভূলণ্ঠিত করার হীন প্রয়াশে জোট বেধেছে দেশি-বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীরা। যদিও তাদের এই প্রচেষ্টা সফল হবে না।এ বিষয়ে তিনি বলেন, পাপুল আটক হওয়াতে কুয়েতে তার কোম্পানিতে কর্মরত প্রায় ১৫ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশী তাদের কাজ হারানোর শঙ্কায় রয়েছেন। বর্তমান করোনা পরিস্থিতে অন্য দেশের মতো কুয়েতেও তিন মাস ধরে লকডাউন চলছে। ফলে অনেক অভিবাসী কর্মী বেকার রয়েছে। তাদের মধ্যে ৭ জন শ্রমিক সরকারি দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেন। এসব বিষয় নিয়ে কুয়েতের সিআইডি সংশ্লিষ্ট প্রবাসী শ্রমিকদের স্যা গ্রহণ করে।

সেলিনা ইসলাম আরো বলেন, পাপুলের হাত ধরে দেশের অনেক বেকার যুবক কুয়েতে গিয়ে স্বাবল


alokito tv

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest