ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১০ আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:২৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৯, ২০২২
স্টাফ রিপোর্টার মোঃ মিরাজ হোসেনঃ
দীর্ঘ ১২ বছরেও সংস্কার না হওয়ায় বরগুনা সদর উপজেলার কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়নের ডৌয়াতলা-আয়লা সড়কটি বেহাল দশা হয়ে পড়েছে,সড়কের পাশে থাকা বাড়িঘর হয়ে উঠেছে দুলার রাজ্য। সড়কটিতে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।
বরগুনা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কার্যালয়ের তথ্যমতে, ২০১২ সালের মাঝমাঝি জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো অপরাশেন এজেন্সির (জাইকা) আর্থিক সহায়তায় ১১ কোটি ৪৭ লাখ ৬৭ হাজার ৬৫ টাকা ব্যয়ে বরগুনা-আয়লা-চান্দখালি (জিসি) ১৫.৯ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করে বরগুনা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ। নির্মাণের পর ওই সড়কটি আর সংষ্কার হয়নি। ফলে সড়কটির পিচ উঠে ইটের সুড়কি বের হয়ে গোটা সড়ক এখন ধূলোর রাজ্যে পরিণত হয়েছে।
বরগুনা জেলা সদরে যোগাযোগের জন্য একমাত্র সড়ক হওয়ায় চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ার পরও ওই সড়কটি ব্যবহার করতে হয় এলাকার বাসিন্দাদের। এছাড়াও ইটবাড়িয়া টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, আয়লা কলেজ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এবং আয়লা ও কদমতলা বাজারে যাতায়তের জন্য ব্যবসায়ীদের এ সড়কটি ব্যবহার করতে হয়।
মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) সরজমিন গুরে দেখা যায়,বরগুনা টু পুরাকাটা আঞ্চলিক মহসড়কের ডৌয়াতলা থেকে আয়লা সড়কটি চলাচলের প্রায় অনুপযোগী। দুই পাশ ভেঙে সড়কটি সরু হয়ে গেছে। পিচ ও আস্তর উঠে তৈরি হয়েছে অসংখ্য গর্ত। আগামী বর্ষার আগে সড়কটির সংস্কার করা না হলে চলাচলে প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়বে সড়কটি।
স্থানীয় বাসিন্দা আলহাজ্ব মনির হোসেন বলেন, এই সড়ক অনেক আগেই যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এখন সড়কটির বেশীরভাগ অংশে পিচের লেশমাত্র নেই। ইটের সুড়কি বিছিয়ে যেমন ফেলে রাখা হয় তেমনি অবস্থায় আছে। আসছে আষাঢ়ে এই সড়ক ব্যবহার করার কোনো উপায় থাকবেনা।
সাবেক আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে মিন্টু হাওলার বলেন, আমরা বাবা বেঁচে থাকা অবস্থায় এই রাস্তার জন্য অনেক ছোটাছুটি করেছেন। আমার বাবা মারা যাওয়ার পরে, আমরা অনেকবার এলজিইডিতে ধর্ণা দিয়েছি। কিন্ত কিছুতে কোনো কাজ হয়নি। আমাদের সড়কটি সংষ্কার করে ভোগান্তি লাঘব করা হোক।
বরগুনা-আয়লা রুটের পিকাপ চালক মোঃ হাসান মিয়া বলেন, ওই রাস্তায় একটা ট্রিপ দিতে গেলে গাড়ির কোনো না কোনো যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যায়। ১৫ কিলোমিটার পথ যেতে এক থেকে দেড় ঘন্টা সময় লাগে। মাঝে মাঝে গর্তে আটকে থাকতে হয়। সংষ্কার না হলে এছাড়া ইটের ধূলোয় যাত্রীসহ আমাদের পোষাকাদি হলুদ হয়ে যায়।তাই আমাদের এই রুট আপাতত বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এই আষাঢ়ে আর ছোট গাড়িও চালাতে পারবেনা মনে হচ্ছে। বর্ষার আগে সড়কটি সংস্কার করা না হলে দুই লক্ষাধিক মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়নের চেযারম্যান মোঃ মনিরুজ্জামান নশা বলেন, আমি বর্তমান সংসদ সদস্য মহোদয়ের ডিও লেটারসহ সদও উপজেলা প্রকৌশলী ও নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করেছি। ওনারা ডিও লেটারসহ সড়ক সংষ্কাওে বরাদ্দ চেয়ে প্রধান প্রকৌশলীর কাছে পাঠিয়েছেন। যতদূও জানি এখনো কোনো সাড়া মেলেনি। আমার এই সড়কটি না হলে এলাকার মানুষ খুবই ভোগান্তিতে পড়বে। বিশেষ করে এখন যে অবস্থা পথচারিদের হাঁটার মতও নেই।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বরগুনা জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী সুপ্রিয় মুখার্জি মুঠোফোনে বলেন, সড়কটি দ্রুত সংস্কারের পরিকল্পনা সিট তৈরী করে পাঠিয়েছি। অনুমোদন হয়ে আসলে ওই সড়কের কাজ শুরু করব। তবে কবে নাগাদ অনুমোদন হয়ে আসতে পারে এ বিষয়ে তিনি নির্দিষ্ট কোনো তথ্য দিতে পারেননি।
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST