টুংটাং শব্দে মুখরিত কামারপাড়া

প্রকাশিত: ২:২৮ অপরাহ্ণ, জুলাই ৭, ২০২২

মুরাদ খান মানিকগঞ্জ থেকে
আগামী ১০ জুলাই পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন মানিকগঞ্জ বিভিন্ন স্থানের কামারপাড়া কারিগররা। দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বা ড়ছে তাদের ব্যস্ততা। লোহার আওয়াজ, হাপরের ফোঁসফাঁস আর হাতুড়িপেটার টুংটাং শব্দে মুখর এখন কামারবাড়ি।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, হাপর দিয়ে কয়লার আগুনে লোহা পুড়িয়ে লাল করে ছোট-বড় নানা আকারের হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ছুরি, বটি, দা, চাপাতি ইত্যাদি। নতুন অস্ত্র বানানোর পাশাপাশি পুরনো অস্ত্র শান দেওয়ার কাজও করতে হচ্ছে সমানতালে। ক্লান্তিহীনভাবে চলছে কাজ, কথা বলার ফুরসত নেই কারো।

শেষ সময়ে এসে কারিগররা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন , বটি, ছুরি, চাপাতি তৈরিতে। এত পরিশ্রমেও তাদের মুখে হাসি ফুটছে। এ উপার্জনই হয়তো অনেকের সারা বছরের আহারের যোগান দেবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মানিকগঞ্জ জেলা শহর ছাড়াও সাতটি উপজেলার প্রতিটি বাজারেই আছে কামারের দোকান। এসব দোকানে সারা বছরই লোহার তৈরি দা, বটি, ছুরি, চাপাতি, কোদাল, কুড়াল, কাঁচি পাওয়া যায়। কিন্তু কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পুরানো যন্ত্রপাতিতে বেড়েছে শানের কাজ।

বিক্রেতারা জানান, পশুর চামড়া ছাড়ানো ছুরি ১৫০ থেকে ২০০, টাকা, বটি ২৫০ থেকে ৫০০, পশু জবাইয়ের ছুরি ৫০০থেকে ১ হাজার টাকা, চাপাতি ১০০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ অন্য বছরের তুলনায় এ বছর ঈদ উপলক্ষে চাপাতি ও ছুরির দাম অনেক বেশি নেওয়া হচ্ছে।

মানিকগঞ্জে সদর উপজেলার বারাহীর চর গ্রামের কামার গোপাল বলেন, ঈদ উপলক্ষে কয়লার দাম ও শ্রমিকের দাম বেড়ে গেছে। আবার অন্যদিকে প্রায় সব ধরনের দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লোহার দামও বেড়েছে। তাই অন্য বারের তুলনায় এবার দাম একটু বেশি মনে হচ্ছে।

হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা বাজারে লক্ষণ কর্মকার বলেন, কোরবানির ঈদ এলে আমাদের বেচা বিক্রি বেড়ে যায়। ঈদের দুই সপ্তাহ আগে থেকে কাজের চাপে দম ফেলার অবস্থা থাকে না। এ বছর চায়না স্টিলের সরঞ্জাম কিনছে অনেকে। তাই তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তারাও ভালো মানের জিনিস তৈরি করছেন। তারপরও শানের কাজ বেশি। আবার শুরু হয়েছে পাট কাটার মৌসুম। সব মিলিয়ে হাতের কাজ করে ভালো আছেন তার পরিবার। মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বারাহীর চর নতুন বাজার এলাকার আমু কর্মকার বলেন, এ মুহূর্তে কারিগরের সংকট। বেশি টাকা দিয়েও কারিগর পাওয়া যায় না। তাই রাতদিন কাজ করতে হয়। তারপরও ঈদের আগে শেষ মুহূর্তে এসে ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়ায় খুশি তারা।


alokito tv

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest