ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৮ আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৭:৪৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৪, ২০২২
বিশেষ প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর দুমকিতে হত্যার উদ্দেশ্যে কলেজ শিক্ষিকাকে অপহরণচেষ্টার ঘটনায় জামিনে থাকা আসামীরা মামলা তুলে নিতে বাদিকে হুমকি প্রদানের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জামিনে বের হওয়া মামলার ২ ও ৩নং আসামীসহ তাদের স্বজনরা মামলা না তুললে যেকোন সময় বাদিকে ফের তুলে নিয়ে হত্যার পর লাশ গুমের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বাদি কলেজ শিক্ষিকা তাহেরা আলী রুমা।
গতকাল রবিবার (২৪ জুলাই) সকালে উপজেলার এলএএম ইউনাইটেড মহিলা কলেজের প্রদর্শক মোসাঃ তাহেরা আলী রুমা এ অভিযোগ করেন।কলেজ শিক্ষকা তাহেরা আলী রুমা জানায়, পটুয়াখালী জেলার দুমকি উপজেলাধীন কার্ত্তিকপাশা গ্রামের মৃত শাহজাহান মৃধার ছেলে যৌতুকলোভী তার সাবেক স্বামী সাইফুল্লাহ জাহান মানিকের সাথে দাম্পত্যকলহের জেরে দু’বছর আগেই তাদের ছাড়াছাড়ি হয়। কলেজের চাকুরির সুবাদে তিনি দুমকিস্থ জনৈক এয়াকুব আলী ম্যানেজারের ভাড়া বাসায় তার ছেলে মেয়ে নিয়ে বসবাস করছেন। ছাড়াছাড়ির পর থেকেই আমার ও আমার বাবার অবসরকালীন অর্থের লোভ সামলাতে না পেরে ক্ষিপ্ত হয়ে নানা ভাবে ক্ষতিসহ প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল।
লিখিত অভিযোগে বাদি কলেজ শিক্ষিকা তাহেরা আলী রুমা অভিযোগ করে জানান, গত ১২ মার্চ দুপুর সাড় ১২টার দিকে আমার কর্মস্থল উপজেলার এলএএম ইউনাইটেড মহিলা কলেজ থেকে বাসায় ফেরার পথে ১নং আসামী সাবেক স্বামী সাইফুল্লাহ মানিক ও তার ছোটভাই বাকেরগঞ্জ থানায় কর্মরত পুলিশ (কং নং ৫৯৫ বিপ-৯২১২১৫০৪০৩) আরিফুল ইসলামসহ ৫/৬জন সশস্ত্র দুর্বৃত্ত অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আমাকে একটি মাহেন্দ্রা গাড়িতে তুলে হত্যার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাচ্ছিল। দুমকি থানা অতিক্রমকালে বাদির ডাকচিৎকারে স্থানীয় ইউপি সদস্য হুমায়ুন কবির মৃধাসহ কয়েকজন মটরসাইকেল চালক ধাওয়া করে মাহেন্দ্রা থেকে তাকে উদ্ধার করেন। এঘটনায় অপহরণচেষ্টাসহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ২০০৩(সংশোধনী এর ৭/৩০) ধারায় পটুয়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতে মামলা চলমান আছে। মামলার ১নং আসামী জেল হাজত ও অপর আসামীরা জামিনে বাইরে এসে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে।
পুলিশি ক্ষমতার অপব্যবহার করে ২নং আসামী, তাদের স্বজন ও ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের দ্বারা যে কোন সময় আমাকে ফের তুলে নিয়ে প্রাণে মেরে লাশ গুমের আশংকা করছি। ইতিমধ্যে আমার দুমকিস্থ ভাড়া বাসার আশপাশে ও কলেজে যাতায়াতের পথে মাঝে মাঝেই সন্দেহভাজন অপরিচিত লোকের আনাগোনায় আমি চরম ভাবে উদ্বিগ্ন। গত শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এমন সন্দহভাজন ৩যুবক মোটরসাইকেলে হঠাৎ আমার বাসার সামনে এসে থামে। এর মধ্যে দুই যুবক চারিদিক পর্যবেক্ষণ করে দ্রুত সিড়ি বেয়ে ওপরে এসে বাইরে থেকে আমার বাসার দরজা আটকে দেয়। শব্দ শুনে ডাকাডাকি করলে বাড়িওয়ালা এসে দরজা খুলে দেয়। ততক্ষনে ওই সন্দেহভাজনরা পালিয়ে যায়। পুরো ঘটনাটি পাশ্ববর্তী দোকানের সিসি ক্যামেরায় রেকর্ড হয়েছে। এবিষয়ে শুক্রবার রাতেই দুমকি থানায় আরও একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। তিনি (ভিকটিম) আরও অভিযোগ করে জানান, আসামীরা জামিনে বাইরে থাকলে যেকোন সময় তারা আমাকে মেরে ফেলতে পারে বলে আশংকা আছে। তাই তিনি জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে স্থানীয় প্রশাসনের স্মরণাপন্ন হয়েছেন।
এবিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুমকি থানার সহকারি পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) শওকত হোসেন অভিযোগের সত্যতা নিশ্চৎ করে বলেন, সিসি ফুটেজ দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
দুমকি থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবদুস সালাম বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST