শ্রমিক নেতা ও বিবাহিতরা মূল্যয়ন পেয়েছে বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের কমিটিতে

প্রকাশিত: ৬:৩৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৪, ২০২২

শ্রমিক নেতা ও বিবাহিতরা মূল্যয়ন পেয়েছে বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের কমিটিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক : পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতাকে আহ্বায়ক করে এক দশক পর বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের কমিটির অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। শনিবার (২৩ জুলাই) দিবাগত রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত ৩২ সদস্যের কমিটির তালিকা জয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়। আগামী তিন মাসের জন্য এই কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়।

 

আহবায়ক : ১। রইজ আহাম্মেদ মান্না
বরিশাল নগরীর চিহ্নিত ক্যাডার, যার নামে রয়েছে একাধিক মামলা, নেই ছাত্রত্ব, করেছেন দ্বিতীয় বিয়ে দুই বউয়ের সংসারে রয়েছে ২টি সন্তান, মান্নার প্রথম স্ত্রীর নাম শিরিন আক্তার, প্রথম সংসারে ৮ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে, দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম আম্বিয়া আক্তার লাবনী, দ্বিতীয় সংসারে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। মান্নার দ্বিতীয় স্ত্রী বরিশাল মেরিস্টপ ক্লিনিকে কর্মরত ছিলেন বর্তমানে তিনি ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
দ্বিতীয় স্ত্রী আম্বিয়া আক্তার লাবনীর বাবার নাম আলী আহাম্মেদ ও মায়ের নাম রওনক জাহান।

 

তথ্যসূত্রে জানাজায়, বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন মান্না ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে সরাসরি প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছিলো সে বরিশাল নগরীর বিসিক এলাকার বিএনপি নেতা আবেদ,কোটন ও বাচ্চুর অনুসারী ছিলেন পরবর্তিতে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে সে নিজের খোলস পাল্টে ছাত্রলীগের রাজনীতীর সাথে যুক্ত হন।মান্নার বাবা মোঃ কাদের বরিশালের বিএনপির নেতা মজিবর রহমান পালিত ক্যাডার যার অস্ত্রের আঘাত এখনও বরিশাল শহরের আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা বয়ে বেড়ায়।

 

কমিটিতে বিতর্কিত শ্রমিক লীগ কর্মী ও বাস মালিক গ্রুপের নেতা রইজ আহমেদ মান্নাকে ঘিরে এই বিতর্ক। রইজ আহমেদ মান্নার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যক্রম, চাঁদাবাজি,খুনের চেষ্টার মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। তিনি বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের কার্যনির্বাহী সদস্য। এছাড়া চলতি মাসে গঠিত বরিশাল বিভাগীয় আঞ্চলিক সড়ক পরিবহন মালিক ফেডারেশনের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও বরিশাল বিভাগীয় আঞ্চলিক সড়ক পরিবহন মালিক ও শ্রমিক ঐক্য ফেডারেশনের আইন বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন।

যুগ্ম আহ্বায়ক : ২। মাইনুল ইসলাম ৩। আরিফুর রহমান শাকিল দু’জনেরই নেই ছাত্রত্ব, সম্প্রতি ঘটা করে বিয়ে করেছেন সেই বিবাহ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে দেখা যায় সিটি মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহকে। বিবাহিত ও ছাত্রত্ব না থাকা সত্বেও হয়েছেন যুগ্ম আহ্বায়ক।

 

কমিটির সদস্যরা হলেন- ফয়সাল বারি নয়ন, কিসমত শাহারিয়ার হাসান (হৃদয়), হাছিবুর রহমান রাঞ্জন, মাহাবুর হাসান অমিত, ইয়াসিন আরাফাত, মো. সাইফুল ইসলাম পারভেজ, মো. আফজাল হোসেন পারভেজ, রাশেদুল ইসলাম আকাশ, আকাশ শিকদার, মো. রোমান হাওলাদার, মো. সিরাজুল ইসলাম রাকিব, আরিফুর রহমান অনিক, আহাম্মেদ রেদওয়ান ফাহিম, সাজ্জাদ আহাম্মেদ শান্ত, মো. মিরাজুল ইসলাম, মো. আল-আমিন, মো. শাওন রাব্বি, জামাশেদ আল ফাতাহ, শেখ তৌহিদুল ইসলাম, সাগর দেবাথ, রিয়াজ মল্লিক, তৌহিদুল ইসলাম শাওন, জয় মালি, রাফিজুল সান, হান্নান মল্লিক অভি, পারভেজ সিকদার, মো. ইমন রহমান সিকদার, ফয়সাল বিন জাবেদ, মাহাফুজুর রহমান।

 

এ নিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরপরই শুরু হয়েছে তুমুল সমালোচনা ও বিতর্ক। ছাত্রলীগের প্রকৃত ও ত্যাগী নেতা-কর্মীদের ভাষ্যমতে ‘ রইজ আহমেদ মান্না একজন মহানগর নেতার অনুসারী। সেই পরিচয়ে ওয়ার্ড পর্যায়ে ছাত্রলীগের কোন পদ পদবী না থাকলেও তিনি বনে গেছেন কখনও ছাত্রলীগ, কখনও শ্রমিক লীগ আবার কখনও ওয়ার্ডের সম্ভাব্য কাউন্সিলর পদপ্রার্থী। নগরীর সর্বত্র বড় বড় সেক্টরে তার সন্ত্রাসী কার্যক্রম। রয়েছে বেশ কিছু মামলা চলমান। বাকিরা ভয়ে চিকিৎসা খরচ পেয়ে মামলা করেনি জীবন বাঁচাতে। এমন বহু উদাহরণ রয়েছে বরিশাল শহরে।

 

ওয়ার্ড পর্যায়ের একজন নেতা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন ‘ আপনারা বরিশালের বিসিক এর চাঁদাবাজির ঘটনা জানেন।সেখান থেকেও মান্না টাকা তোলে,মারধর করে।সেই সন্ত্রাসী মান্নাকে আবার ঐতিহ্যবাহী ছাত্রলীগ মহানগর সভাপতি বানায় কি করে?

 

বরিশাল বিসিক শিল্প নগরীর বিনিয়োগকারীরা বলেন’ আমরা রইজ আহমেদ মান্নার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি’। প্রায় প্রতিনিয়ত মান্নার সন্ত্রাসীরা শিল্প মালিকদের উপর হামলা করছে নিয়মিত তাদের কাছে চাঁদা দাবি ও চাঁদা আদায় করছে। শিল্প প্রতিঠান চালানোর জন্য কেউ চাঁদা দিতে না চাইলে তার উপর সন্ত্রাসী মান্না বাহিনীর হামলা চলে। এতে দিনদিন অনিরাপদ হয়ে পড়েছে বিসিক ও এর শিল্প কারখানা। শিল্প মালিকরা এখন নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে এবং তাদের শিল্পপ্রতিষ্ঠান অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার কথা ভাবছে। বিসিক শিল্প নগরীর অভ্যন্তরে সন্ত্রাসী হামলা ও চাঁদাবাজি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে।

 

রইজ আহমেদ মান্নার সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর হিমাদ্রী শেখর সাহা সন্ত্রাসী হামলা, চাঁদাবাজি, অর্থ ছিনতাই এবং শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন।তার পিতার নাম হিমাংশু সাহা।তিনি কালাচাঁদ শাহের বাড়ী, দপ্তর খানার বাসিন্দা। হিমাদ্রী শেখর সাহা মৌমিতা বেকারী, বিসিক কাউনিয়া বরিশালের একজন শিল্প মালিক।

 

রইজ আহমেদ মান্নার বাহিনীর নগরীর মিরা বাড়ীর মোড়, বিসিকের আব্দুর রহমান ওরফে রহম আলীর পুত্র সন্ত্রাসী মাসুদ, রুহুল আমিন, সন্ত্রাসী মো.হৃদয় এবং অজ্ঞাত নামা ১০/১২ জন, সন্ত্রাসী হিমাদ্রীকে দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন সময়ে চাঁদা দেওয়ার জন্য বল প্রয়োগ করতো বলে জানা যায়। তৎকালীন সময়ে আহত ও ভুক্তভোগীদের ভাষ্যমতে, ঘটনার দিন বিকেলে শিল্প নগরীর অভ্যন্তরে অতর্কিত ভাবে(হিমাদ্রীকে) তাকে লাঠি সোটা সহ হামলা করে এবং শারীরিক নির্যাতন করে মারাত্মক ভাবে আহত করে। সন্ত্রাসীদের লাঠির আঘাতে তার ডান চোখের নীচে রক্ত জমাট বেঁধে কালসিটে হয়ে যায়। এক পর্যায়ে তারা হিমাদ্রী শেখর সাহা এর কাছে থাকা টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এছাড়া একই সময়ে তার বেকারীতে উৎপাদিত পণ্য পরিবহনের জন্য ব্যবহারিত মাহেন্দ্রা কাভার ভ্যানটি ভেঙ্গে ক্ষতি করে ও আত্মসাৎ করে।

 

এদিকে বিসিকের নির্যাতিত একটি সূত্র জানায় ২০২০ সালে বিসিক থেকে বালু ভরাট করার প্রায় ৩৬ লাখ টাকার পাইপ রাতের আধারে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে যায় । পরে বিসিক শিল্প মালিকরা জানতে পারে যে রইজ আহমেদ মান্না, টুটুল ও অনিকের সন্ত্রাসী বাহিনী এই পাইপ নিয়ে গেছে।

 

সন্ত্রাসী হামলার ধারাবাহিকতায় একদল সন্ত্রাসী রইজ আহমেদ মান্নার নেতৃত্বে বিসিকের ইন্ডাস্ট্রিজ কারখানায় হামলা চালায়। তিনজন সন্ত্রাসী মো. রইজ আহমেদ মান্না, মো. হৃদয় এবং মো.হীরা ২৪ অক্টোবর বিসিক শিল্প নগরীতে চাপাতি, লাঠি, ও অস্র সহ প্রবেশ করে । এ সময় বিসিকের একজন শিল্প মালিক তাদের কারখানা পরিদর্শনের আহবান করলে তাকে অতর্কিত ভাবে কিল ঘুষি ও শারীরিক ভাবে নির্যাতন করে ড্রেনের পাশে ফেলে দেয় । এ হামলায় এমজে ইন্ডাস্ট্রিজ এর পরিচালক শফিউল আজম সহ কয়েকজন মালিক আহত হন। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে । শিল্প মন্ত্রণালয়ের চলমান উন্নয়ন কাজে বাঁধা দেওয়াই তাদের মূল লক্ষ্য। সন্ত্রাসীরা দীর্ঘদিন ধরে শিল্প নগরীতে চাঁদা দাবি করে আসছিলো বলে দাবী করেছে বিসিক শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক সমিতি।

 

বিসিক শিল্প মালিক সমিতি আরও বলেন’
এই সন্ত্রাসীরা চাঁদা দাবি করেন বিসিকের নানামুখী সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রতিনিয়ত বাধার সৃষ্টি করছে। এরমধ্যে সন্ত্রাসীদের বাধার কারণে কিছু কিছু সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড কাজ বছরের পর বছর ধরে আটকে আছে।

 

এছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গোয়েন্দা শাখার চিহৃিত অপরাধী মান্নাকে একাধিকবার গোপনে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বেশ কয়েকটি সংস্থা। জীবন বাঁচাতে মান্না প্রায় ২ বছর আত্নগোপনে ছিলো।

 

মহানগর পদবঞ্চিত সভাপতি হওয়ার যোগ্য ছাত্রলীগ এক নেতা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানান দীর্ঘ ১১বছর পর গঠন হলো বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি ছাত্রলীগের কমিটিকে ঘীরে বরিশাল মহানগর শাখার সকল ছাত্রলীগ কর্মীদের আশার পারদ ছিলো আকাশচুম্বী, সাধারন ছাত্রলীগ কর্মীদের দীর্ঘদিনের দাবি সম্মেলনের মাধ্যমে যোগ্য নেতৃত্ব আসবে সঠিক ধারায় পরিচালিত হবে বঙ্গবন্ধু’র নিজ হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কিন্তু বাস্তবে এ যেন মূদ্রার অপর পিঠ সিটি মেয়র সাদেক আব্দুল্লাহর অনুসারী বিবাহিত /ছাত্রত্বহীন ও শ্রমিক ফেডারেশনের সদস্য সহ গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়েছে,অযোগ্য লোকদের এ নিয়ে বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগ পদবঞ্চিত ত্যাগী ছাত্রলীগের কর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজমান, যে ক্ষোভের বিষ্ফোরন ঘটতে পারে বরিশাল শহরে। পদবঞ্চিত ত্যাগী ছাত্রলীগের কর্মীরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest