যুগোপযোগী হিসাবে কারিগরি শিক্ষার প্রসারে বিভিন্ন ইতিবাচক দিক গুরুত্ব দেওয়া

প্রকাশিত: ৯:১৪ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৩, ২০২২

যুগোপযোগী হিসাবে কারিগরি শিক্ষার প্রসারে বিভিন্ন ইতিবাচক দিক গুরুত্ব দেওয়া

লেখক:বিন-ই-আমিন 

সিনিয়র সহকারী শিক্ষক,

নলছিটি গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঝালকাঠি 

নিউজ ডেস্ক:জিয়াউর রহমান:

কারিগরি শিক্ষার প্রসারে অনেক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। ২০২১ থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কারিগরি বিষয় অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত করোনার কারণে বাস্তবায়ন সম্ভব না হলেও আগামী বছর (২০২৩) থেকে তা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে যুগোপযোগী। ধীরে ধীরে প্রাথমিক স্তর থেকে কারিগরি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হলে আরও দ্রুত এ শিক্ষার প্রসার ঘটবে।

কারিগরির সব সিদ্ধান্ত সমান সুবিধা দেবে তা আশা করা কঠিন। সরকারি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মান কিছুটা থাকলেও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকের অবস্থা করুণ। সরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকও যুগোপযোগী মানের নয়। বিদ্যমান বেসরকারি মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনাল কোর্স কারিগরি শিক্ষার হার বাড়ায় ঠিকই, কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করা শিক্ষার্থীরা মূল শিক্ষায় দুর্বল থেকে যায়। দক্ষ জনশক্তি তৈরি সম্ভব হয় না।

টিটিসি ও জনশক্তি রপ্তানির আওতাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোয় দক্ষ জনবল নিয়োগ দিয়ে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির আওতাধীনে আনার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। বাংলাদেশ থেকে দক্ষতাবিহীন জনশক্তি রপ্তানি করায় কম রেমিট্যান্স আসছে। দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির করতে পারলে রেমিট্যান্স প্রবাহ দ্বিগুণের বেশি হবে বলে আশা করা যায়। আমাদের শিল্পকারখানায় দেশীয় দক্ষ জনশক্তি নিয়োগ হলে পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে বেশি বেতনে বিদেশি শ্রমিক নিয়োগেরও প্রয়োজন হবে না। ফলে বিদেশ থেকে পাঠানো রেমিট্যান্স এবং দেশের ভেতরে দক্ষ শ্রমিকের মাধ্যমে উপার্জিত আয়ে দেশ অল্প সময়ে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে।

উন্নত দেশগুলোর দিকে তাকালে দেখা যাবে তারা শিক্ষায় যতটা উন্নত, তার চেয়ে বেশি উন্নত যুগোপযোগী শিক্ষায়, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায়।

জার্মানিতে ৭৩, জাপানে ৬৬, সিঙ্গাপুরে ৬৫, অস্ট্রেলিয়ায় ৬০, চীনে ৫৫, দক্ষিণ কোরিয়ায় ৫০ শতাংশ মানুষ কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত ও দক্ষ।

সব উন্নত দেশে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তাদের শিক্ষাব্যবস্থার কারিকুলাম তৈরি করা হয়। আমাদের দেশে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের তথ্যমতে, ২০১৮ সালে কারিগরি শিক্ষার হার ১৪ শতাংশ।

২০৩০ সালে এ হার ৩০ শতাংশের লক্ষ্য নিয়ে এগোলেও বাস্তবায়ন কতটুকু সম্ভব তা দেখার বিষয়। বাস্তবে আন্তর্জাতিক কারিগরি শিক্ষার সংজ্ঞা ও ব্যানবেইসের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, এটি মূলত ১০ শতাংশের নিচে। নারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা হতাশাজনক।দেশে দেরিতে হলেও বিষয়টি উপলব্ধি করতে পেরে এখন কারিগরি শিক্ষার প্রতি অধিক গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে।

কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থা একসময় অপরিচিত ছিল। বঙ্গবন্ধু শিল্পমন্ত্রী থাকাবস্থায় ঢাকার বর্তমান পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়। ধীরে ধীরে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। কারিগরি শিক্ষার অবস্থার পরিবর্তনও হয়েছে ধীরে ধীরে। ১৯৯৬ সালে বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কারিগরি শিক্ষার প্রসারে বিভিন্ন ট্রেডে শিক্ষার্থী ভর্তি চালু হয়।

২০২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে সব মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসায় কারিগরি বিষয় চালু করা হলে অল্প সময়ে যুগোপযোগী এ শিক্ষা বিস্তার লাভ করবে। ধীরে ধীরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কারিগরি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। মান বাড়াতে হবে। দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।

সরকারি প্রতিষ্ঠানের মান মোটামুটি থাকলেও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণভাবে মানসম্মত নয়। টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারগুলোও পর্যাপ্ত ও প্রয়োজনীয় দক্ষতাসম্পন্ন জনবল তৈরি করতে পারছে না। ফলে বিদেশে গিয়ে এদেশের কর্মীদের কম বেতনে চাকরি করতে হচ্ছে। অথচ আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত ও দক্ষ জনশক্তি বিদেশে কাজ করে দ্বিগুণেরও বেশি অর্থ উপার্জন করছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন শিল্পকারখানা ও গার্মেন্ট শিল্পেও ভারতের লোকজন অ্যাডভাইজার হিসাবে উচ্চ বেতনে কাজ করছে। সেখানে আমাদের অদক্ষ শ্রমিকরা তাদের অধীনে চাকরি করছে খুবই কম বেতনে।

বর্তমান সরকার শিক্ষাক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন এনেছে। বেশি পরিবর্তন হয়েছে কারিগরি শিক্ষায়। একসময় কারিগরি শিক্ষায় পড়ার আগ্রহী শিক্ষার্থী পাওয়া কঠিন ছিল। ২০০৮-২০০৯ সালেও কারিগরি শিক্ষায় এনরোলমেন্ট ছিল ৫ শতাংশের নিচে। কারিগরি শিক্ষাকে অগ্রাধিকারের ঘোষণা দিয়ে বর্তমান সরকার উন্নতির প্রধান হাতিয়ার হিসাবে এ শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে আসছে।

তবে ২০২০ সালে এ শিক্ষাকে ২০ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা নিয়ে এগোলেও লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে পারেনি সরকার। সরকারের মহৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের পথে আমলাতান্ত্রিক জটিলতাকেই দায়ী করে কারিগরি শিক্ষার সচেতন মহল। একটিমাত্র শিক্ষা বোর্ডের অধীন পরিচালিত দেশের কারিগরি শিক্ষার প্রসারে সিলেবাস প্রণয়নেও আধুনিকতা ও উপযোগিতার ঘাটতি আছে। অভিভাবকদের সচেতনতাও কারিগরি শিক্ষা প্রসারের অন্তরায়।

আমাদের সাধারণ শিক্ষাব্যবস্থায় মাধ্যমিক পাশের পর অনার্স-মাস্টার্স সম্পন্ন করতে ১০ বছর সময় লাগলেও ৪ বছরের ডিপ্লোমাসম্পন্ন একজন দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তার সমান স্কেলে বিভিন্ন দপ্তরে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করা ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখেন সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। তারা তাদের মেধাবী সন্তানদের সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত করেন আর দুর্বল মেধার ছেলেমেয়েদের কারিগরি শাখায় ভর্তি করান। অথচ কারিগরি শাখার সিলেবাস সাধারণ শিক্ষা থেকে কোনো অংশেই কম বা দুর্বল নয়। কারিগরি শাখার সব শিক্ষার্থীকেই পদার্থ ও রসায়ন বিষয় বাধ্যতামূলক পড়তে হয়। বাড়তি পড়তে হয় ট্রেড বিষয়। দুর্বল মেধার পেছনের একজন শিক্ষার্থীর পক্ষে কারিগরি শাখার পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নের মতো সিলেবাস আয়ত্ত করা কঠিন।

বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের ১২টি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর ৩ ঘণ্টায় দিতে হয় একজন কারিগরি শাখার নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে। এমনিতেই দুর্বল প্রকৃতির ছেলেমেয়েরা কারিগরি শাখায় আসে। তাদের জন্য ১২টি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর ৩ ঘণ্টায় দেওয়া প্রায় অসম্ভব। এটি যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।

কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থায় ব্যাবহারিক ক্লাসের যে বিধান তা বাস্তবায়ন হয় না। সরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্যাবহারিক ক্লাসের কাঁচামাল, অবকাঠামো ও অন্যান্য বিষয় সহজলভ্য হলেও বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নবম ও দশম শ্রেণিতে নামকাওয়াস্তে ব্যাবহারিক হয়। একসময় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ব্যাবহারিক ক্লাসের কাঁচামালের সরবরাহ থাকলেও পরবর্তী সময়ে বন্ধ হয়ে যায়।

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভোকেশনাল শিক্ষা কার্যক্রম কাগজে-কলমে থাকলেও বাস্তবে সাধারণ শিক্ষার সঙ্গে এর কোনো অমিল নেই। এ অবস্থায় আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে কারিগরি বিষয় অন্তর্ভুক্তির বাস্তবায়নেও কোনো দিকনির্দেশনা পায়নি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠানপ্রধানরা। সাধারণত দুর্বল মেধা ও আর্থিকভাবে দুর্বল শিক্ষার্থীরা কারিগরি শাখায় ভর্তি হয়। আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটে এটাই চলে আসছে। কারিগরি শিক্ষা বিষয়ে নেতিবাচক ধারণা ইতিবাচক হতে সময় লাগবে। সাধারণত মধ্যম মেধার ছেলেমেয়েরা পলিটেকনিক, টেক্সটাইল, কৃষি বা অন্যসব ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তি হলেও এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনাল শাখায় ভর্তি হয় কম মেধার ছেলেমেয়েরা।

সরকার কারিগরি শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে ঠিকই, কিন্তু আসল সমস্যা নীতিনির্ধারণে। বেসরকারিভাবে যেসব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট গড়ে ওঠেছে, সেসবের মান নিয়েও আছে প্রশ্ন। সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটেই যেখানে দক্ষ শিক্ষকের অভাব রয়েছে, সেখানে বেসরকারির অবস্থা কোন পর্যায়ে তা অনুমেয়।

সরকার প্রতি উপজেলায় একটি করে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কারিগরি শিক্ষার প্রসারে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। তবে মানসম্মত ও দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ না হলে কারিগরি শিক্ষার প্রসার ব্যাহত হবে। পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ভর্তির ক্ষেত্রে বয়সের সীমাবদ্ধতা না থাকা প্রতিক‚লতার আরেকটি কারণ। ব্রিটিশ আমল থেকেই আমরা দেখে আসছি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে বয়সের সীমাবদ্ধতা। হঠাৎ করে বয়স্কদের সঙ্গে এসএসসি ও এইচএসসি পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সুযোগকে সচেতন মহল ভালোভাবে নেয়নি।

কারিগরি শিক্ষার প্রসারে বিভিন্ন ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন স্তরের কারিগরিসংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারণী ব্যক্তি, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষকদের মতামত নেওয়া যেতে পারে। হুট করে আÍঘাতী সিদ্ধান্ত কারিগরি শিক্ষার প্রসারে অন্তরায় হবে। কারিগরি শিক্ষার বিভিন্ন ইতিবাচক দিক নিয়ে বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ সব বেসরকারি চ্যানেলে প্রচারণামূলক অনুষ্ঠান প্রচার করা যেতে পারে। একজন অভিভাবক তার সন্তানকে বেশি বয়সি কারও সঙ্গে পড়াশোনা করাকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখবে না। আমাদের সমাজব্যবস্থায় পরিবর্তন সহজেই সম্ভব নয়। সাধারণ শাখায় ইতিহাস, অর্থনীতি পড়া øাতক ডিগ্রিধারী বেকার যুবকের সংখ্যা লাখ লাখ। তারপরও অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানকে কারিগরি শাখায় ভর্তি করাতে চান না। কারিগরি শিক্ষাকে এখনো সাধারণ মানুষ ইতিবাচক মনে করছেন না।

সরকার কারিগরি শিক্ষার প্রসারে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসএসসি ভোকেশনাল শিক্ষাক্রম চালু করে যুগোপযোগী কারিকুলাম প্রণয়ন করেছে। ভালো ফলাফলের জন্য পরীক্ষা পদ্ধতিতেও অনেক পরিবর্তন এনেছে। শিক্ষকদের নিবিড় পরিচর্যা ও আন্তরিকতায় পরিচালিত হয় কারিগরি শিক্ষা। একসময় মুখস্থ বিদ্যার প্রতি শিক্ষার্থীদের নির্দেশনা দিত শিক্ষকরা। তখন ক্লাসের বেশির ভাগ সময়ই শিক্ষকদের শিক্ষাদান করতে হতো। এখন পুরো সময়ে শিক্ষার্থীর ভমিকাই বেশি। সৃজনশীল পদ্ধতির শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা নিজের মেধাকে কাজে লাগায় বেশি। শিক্ষক সেখানে শুধু প্রদর্শক হিসাবে দায়িত্ব পালন করে। এসএসসি ভোকেশনাল কারিকুলামে বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে যারা ভর্তি হন, তাদের অধিকাংশই দুর্বল প্রকৃতির। এসব শিক্ষার্থীকে রসায়ন ও পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে পাঠদান কতটুকু ফলপ্রসূ হবে?

এ ব্যাপারে আমার পরামর্শ হলো-

১. যুগোপযোগী সিলেবাসের সঙ্গে শিক্ষক প্রশিক্ষণ জরুরি, তাই শিল্পকারখানায় প্রশিক্ষিত জনবল দ্বারা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া;

২. পর্যাপ্ত ব্যাবহারিক ক্লাস ও ব্যাবহারিক ক্লাসের জন্য অবকাঠামো নির্মাণ করা এবং পরিবর্তিত সিলেবাসে শিক্ষক প্রশিক্ষণ দেওয়া;

৩. বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের সিলেবাস কমিয়ে অর্ধেকে আনা। বর্তমান সিলেবাসে এসএসসি ভোকেশনাল কারিকুলামে বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে ১২টি প্রশ্নের উত্তর দেওয়া খুবই কষ্টসাধ্য। কারিগরি শিক্ষায় এ বিষয়টি খুব বেশি গুরুত্ব বহন করে না;

৪. কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের আঞ্চলিক অফিসের কার্যক্রম বাড়ানো;

৫. ডিপ্লোমা কোর্সে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া এবং ব্যাবহারিক ক্লাসের প্রতি গুরুত্বারোপ করা;

৬. শিক্ষা বাজেটে কারিগরি শিক্ষার প্রসারে প্রকৃত বরাদ্দ বৃদ্ধি করা;

৭. বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে আরও দক্ষ শিক্ষক নেওয়া এবং ব্যাবহারিক ক্লাসের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা রাখা;

৮. ডিপ্লোমা সম্পন্ন করার পর বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার পর্যাপ্ত আসন ও আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করা;

৯. পুরোনো কোর্স বাদ দিয়ে আধুনিক ও যুগোপযোগী কোর্স চালু করা;

১০. উৎপাদনমুখী শিক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ করা;

১১. ডিপ্লোমা চাহিদাসম্পন্ন পদগুলোয় বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের আবেদনের সুযোগ না দেওয়া;

১২. বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমাধারী ট্রেড ইনস্ট্রাকটরদের বিভাগীয় পদোন্নতির মাধ্যমে একাডেমিক সুপার ও সুপারিনটেনডেন্ট পদে পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টি করা;

১৩. শিক্ষকদের জীবনমান বৃদ্ধি, এমপিওভুক্তি, বেতন সুবিধা আরও আধুনিক ও সময়োপযোগী করা। অবহেলিত বেসরকারি শিক্ষকসমাজ যতটা অবহেলিত, তার চেয়ে বেশি অবহেলিত বেসরকারি কারিগরি শিক্ষকসমাজ। অধিদপ্তরের কাজের ধীরগতি এবং শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি ও বেতন স্কেলের জটিলতা নিরসনে আশু পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

 


মুজিব বর্ষ

Pin It on Pinterest