ঢাকা ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:৫২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৯, ২০১৯
মন্ত্রী, এমপি, সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ অনেকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জালে আবদ্ধ। তবে এবার সংস্থাটির জালে আনা হচ্ছে ছাত্রলীগের একাধিক নেতাকে। সংগঠনটির অব্যাহতি পাওয়া সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর সম্পদের অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক। ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলমের বিরুদ্ধেও অনুসন্ধান শুরু হচ্ছে বলে জানা গেছে।
একাধিক সংসদ সদস্য, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতা, যুবলীগ,ছাত্রলীগ, কাউন্সিলর, ঢাকা সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরসহ শতাধিক ব্যক্তির সম্পদের খোঁজে দুদক।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী গত ১৮ সেপ্টেম্বর শুদ্ধি অভিযান শুরু করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এরই অংশ হিসেবে ৩০ সেপ্টেম্বর অনুসন্ধান দল গঠন করে দুদক। দুদকের মহাপরিচালক (বিশেষ তদন্ত) সাঈদ মাহবুব খানকে তদারক কর্মকর্তা ও পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনকে প্রধান করে সাত সদস্যের অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়।
জানাযায়, যাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে তাদের মধ্যে কয়েকজন ইতিমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। অনেকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অপ্রদর্শিত ও অবৈধ সম্পদের তথ্য পাওয়ার পর অনুসন্ধান শুরু করেছে সংস্থাটি। তবে এ বিষয়ে মুখ খুলছেন না দুদকের কোনো পর্যায়ের কর্মকর্তা।
যদিও দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখত গণমাধ্যমকে বলেছেন, বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি গণমাধ্যমে আসা নামগুলোও সংগ্রহ করে অনুসন্ধান দল কাজ করছে। তালিকা বড়-ছোট না, যাদের নামে অভিযোগ আসছে, তার অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, অভিযুক্ত অবৈধ সম্পদ ও মুদ্রাপাচারের বিষয়টি দুদকের এখতিয়ারভুক্ত। অনুসন্ধানে তথ্যপ্রমাণ মিললে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হবে। তাদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে কমিশন মামলা করবে।
দুদকের অনুসন্ধান দলের তালিকায় চারজন বর্তমান ও একজন সাবেকসহ পাঁচজন সংসদ সদস্যের নাম রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছেন জাতীয় সংসদের হুইপ ও চট্টগ্রাম-১২ আসনের সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী, ভোলা-৩ আসনের নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন ও তার স্ত্রী ফারজানা চৌধুরী, বরিশাল-৪ আসনের সংসদ সদস্য পংকজ দেবনাথ, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু ও তার স্ত্রী সায়মা আফরোজ এবং সাতক্ষীরার সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মুজিবুর রহমান।
বাকিদের মধ্যে পাঁচজন ঢাকার কমিশনার ছাড়া বেশিরভাগই ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আ.লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ সরকারি দলের সহযোগি সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতা। এসব নেতাদের স্ত্রী ও পিতা-মাতাও তালিকায় রয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে জানাযায়, হঠাৎ উড়ে এসে জুড়ে বসেই রাতারাতির মধ্যে কোটিপতি হয়ে রাজনৈতিক মাঠে দাঙ্গামা চালিয়ে যাচ্ছেন।এরমধ্যে বেশিরভাগ নাম উঠে আসে জেলা পর্যায়ে দলের বিভিন্ন পদে থাকা নেতাদের তালিকা হচ্ছে। টেন্ডার, দখল, নিয়োগ বাণিজ্য, বিদেশে বাড়ি গাড়ি, বড় বড় কোম্পানি খুলে কোটি কোটি টাকা আয়, নামে বে-নামে প্রতিষ্ঠান।
আ.লীগ দলীয়সুত্রে জানায়, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাংলাদেশকে দুর্নীতিমুক্ত করা। দলের হোক বা যে হোক কেউ রক্ষা পাবে না। প্রধানমন্ত্রী তার ঘর থেকেই এই অভিযান শুরু করেছেন। জেলা-উপজেলা পর্যায়েও বড় বড় দুর্নীতিবাজদের তালিকা হচ্ছে তা অচিরেই আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও জানাযায়, দলের ত্যাগীদের বঞ্চিত করে বড় পদ-পদবী দখল করে যেসকল নেতা রয়েছেন তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।গোয়েন্দা রিপোর্টে চলে আসছে দলের দুঃসময়ের নেতাকর্মীদের দিনের পর দিন মামলা দিয়ে জেলহাজতে রাখা হয়েছে। একসময়ের ত্যাগী নির্যাতিতরা আজ সবকিছু থেকে বঞ্চিত রয়েছে। যারা এদেরকে বঞ্চিত করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST