সুনামগঞ্জে জমে ওঠেছে বৃক্ষমেলা

প্রকাশিত: ১০:০৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২১, ২০২২

সুনামগঞ্জে জমে ওঠেছে বৃক্ষমেলা

শামসুল কাদির মিছবাহ, সুনামগঞ্জঃ
“বৃক্ষ- প্রাণে প্রকৃতি প্রতিবেশ, আগামী প্রজন্মের টেকসই বাংলাদেশ’। এ প্রতিপাদ্য নিয়ে সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জমে ওঠেছে বৃক্ষমেলা।
প্রতিদিন ক্রেতা-দর্শনার্থী আর বৃক্ষ প্রেমীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে মেলাপ্রাঙ্গণ। দেশি-বিদেশি প্রায় ৩০ প্রজাতির ফল, ফুল, কাঠ ও ঔষধি গাছের চারা নিয়ে ১৬ টি স্টল স্থান পেয়েছে এ মেলায়। বিভিন্ন স্কুল, কলেজের ছাত্রছাত্রীসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষজন আসছেন মেলা প্রাঙ্গণে। ঘুরে দেখার পাশাপাশি সাধ্যমত গাছের চারা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।
জেলা প্রশাসন, বন বিভাগ ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুনামগঞ্জের আয়োজনে সপ্তাহব্যাপি মেলা শুরু হয় গত ১৭ আগস্ট। শেষ হবে ২৩ আগস্ট। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয় মেলা প্রাঙ্গন। জেলার বিভিন্ন প্রান্তের নার্সারি মালিকদের ১২ টি স্টলসহ প্রদর্শনীর জন্য বন বিভাগ ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দুটি করে চারটি স্টল স্থান পেয়েছে। আশানুরুপ বেচাবিক্রি হচ্ছে বলে জানান নার্সারি ও স্টল মালিকরা।

মোমেন নার্সারির মালিক মোমেন মিয়া বলেন, আমার স্টলে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন প্রজাতির চারা রয়েছে। ভালো বেচাবিক্রিও হচ্ছে। তিনি জানান, নিম্নে ১০ টাকা থেকে ১৫ শ টাকা মূল্যের চারা রয়েছে তাঁর স্টলে। আম্রপালি, বানানা আম, ছফেদা,কিডস, বল সুন্দরী (বড়ই গাছের চারা)সহ বিভিন্ন ফল, ফুল ও ঔষধি গাছের চারা রয়েছে।

রোববার (২১ আগস্ট) দুপুরে মেলাপ্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজনের অনেক ভিড়। ক্রেতারা তাঁদের পছন্দমত বৃক্ষের চারা ক্রয় করছেন।

বৃক্ষমেলায় কথা হয়, গণমাধ্যমকর্মী কুদরত পাশার সঙ্গে। তিনি আম্রপালিসহ বিভিন্ন প্রজাতির চারা ক্রয় করেছেন। কিছু চারা বাসার ছাদে টবে এবং কিছু চারা গ্রামের বাড়ি নিয়ে রোপন করবেন।

কয়েকটি কিডস হাতে মেলা থেকে বের হতে দেখা যায় দুই শিশু মেয়ে ও তাদের মাকে। কিডস হাতে উৎফুল্ল শিশুদের মুখে আনন্দের হাসি।

বৃক্ষমেলায় দেখা হয় কবি দম্পতি আশরাফ শাহীন ও রুনা লেইসের সাথে। তাঁরা সবুজ বৃক্ষের সমারোহে স্মার্টফোনের ক্যামেরায় মনের আনন্দে ছবি উঠছেন।
কবি দম্পতি বলেন, মেলায় ঘুরে দেখতে এসেছি। চারদিকে সবুজের সমারোহ দেখে প্রাণ জুড়িয়ে যায়।

মেলা প্রাঙ্গণে কথা হয় গণমাধ্যমকর্মী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, বৃক্ষের চারা কেনা আমার নেশা।বৃক্ষমেলা ছাড়াও প্রায়ই নার্সারি থেকে সময় সুযোগ পেলেই চারা ক্রয় করি। তারপর এগুলো বাসার ছাদে টবে বড় করে প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে বিতরণ করে দেই। তিনি বলেন, ‘সবুজ বাঁচলেই তো মানুষ বাঁচবে। নিজেদের প্রয়োজনেই প্রত্যেক নাগরিকের উচিত বেশি করে গাছ লাগানো।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের স্টলে কথা হয়, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সনি তালুকদারের সঙ্গে। তিনি জানান, তাদের স্টলে দেশী-বিদেশী প্রায় ৩০ প্রজাতির ফল প্রদর্শন করা হচ্ছে। মানুষকে ফল চেনানো ও চারা রোপনে উদ্বুদ্ধ করার জন্য এই প্রদর্শনী।

সুনামগঞ্জ রেঞ্জ কর্মকর্তা চয়ন ব্রত চৌধুরী বলেন, সুনামগঞ্জ জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শুরু হওয়া বৃক্ষমেলায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ক্রেতা ও দর্শনার্থী অনেক বেড়েছে। প্রকৃতি ও প্রতিবেশ রক্ষায় মানুষ আরো সচেতন হয়ে উঠছে। টেকসই বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সবুজ বনায়নে প্রত্যেক নাগরিকের এগিয়ে আসা উচিৎ।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest